চীনে উইঘুর মুসলিমদের ওপর সর্বশেষ নিপীড়নের খড়গ নেমেছে। দেশটিতে সংখ্যালঘু মুসলিমদের মদ আর শূকরের মাংস খেতে বাধ্য করা হচ্ছে, যা মুসলিম আইনে নিষিদ্ধ। খবর ইয়েনি শাফাক
স্থানীয় শিনজিয়ানরা বলেন, আমরা যদি নতুন বছরে রাতের খাবারে শূকরের মাংস না খাই তাহলে কারিগরি শিক্ষাকেন্দ্রে আটক করার হুমকি দিচ্ছে চীনা কর্তৃপক্ষ। ফ্রি এশিয়ান রেডিওর এক প্রতিবেদনে এসব জানানো হয়।
শিনজিয়ানের কাজাখ মানুষ কখনোই শূকরের মাংস খেতে অভ্যস্ত না বললেন কাজাখের বাসিন্দা আলতাজ কিংগিল। গতবছর নতুন বছর উদযাপন পালনে শূকরের মাংস খেতে বাধ্য করা হয়। উপরন্তু, স্বশাসিত কাজাখে সাহায্যের নামে কাঁচা শূকরের মাংস খেতে দিয়ে ছবি তুলে রাখা হয়।
বসন্ত উৎসব বা চন্দ্র নববর্ষের উৎসব নিয়ে চীনা কতৃর্পক্ষ নিপীড়ন ও হুমকি অব্যাহত রাখছে। উইঘুর মুসলমানদের হান চাইনিজ সংস্কৃতি হজম করাতে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু কাজাখের লোকজন বসন্ত উৎসব পালন করেন না, বললেন একজন কাজাখ নারী যার নাম কাসে। তিনি বলেন, আমাদের প্রধান উৎসব ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহা। নববর্ষ হান চীনা এবং যারা বৌদ্ধধর্মে বিশ্বাসী তারা পালন করে।
আমরা এটি পালন করতে রাজি না হলে আমাদের দুটি জিনিস মোকাবেলা করতে হয়। এর মধ্যে বেশি জোর করে পাঠানো হয় ‘শিক্ষাশিবিরে’। অনেকেই চীনের শিনজিয়ান উইঘুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের কথা উল্লেখ করে। তুর্কি উইঘুর জনগণসহ অনেক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাস পূর্ব তুর্কিস্তানে। তারা বিশ্বাস করে উইঘুর মুসলমানদের বসবাস তুর্কিক উপজাতি অঞ্চলে। তারা বিবেচনা করে উইঘুররা মধ্যএশিয়ার অংশ চীনের নয়।
উইঘুররা তুর্কি জাতির একটি অংশ যার ৪৫ শতাংশ জনসংখ্যা শিনজিয়ানয়ে রয়েছে, অভিযোগ করা হচ্ছে চীন তাদের ধর্মীয়, বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক কার্যকলাপগুলোকে রোধ করার জন্য দমনমূলক নীতি অব্যাহত রাখছে।
এদিকে স্যাটেলাইট ইমেজে দেখা গেছে গত তিন মাস আগে চীন তাদের মুসলিমদের আটক শিবির সাত লাখ মিটার বিস্তৃত করেছে। চীনের মুসলিম কারাগারগুলো নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। কারণ বেইজিং কারাগারগুলোর অস্তিত্ব অস্বীকার করেছে। চীন বহু বছর ধরে দেশটির উইঘুর সংখ্যালঘুদের নিপীড়নের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো প্রত্যাখ্যান করে আসছে। চীন কারাগারে আটকের পরিবর্তে বলছে তাদের ‘বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ’ দেওয়া হচ্ছে।
শিনজিয়ান অঞ্চলে ১ কোটি উইঘুর মুসলিম বসবাস করছে। তুর্কি মুসলিম গ্রুপ শিনজিয়ানয়ের প্রায় ৪৫ শতাংশ মানুষ দীর্ঘদিন ধরে চীনের কর্তৃপক্ষের দ্বারা সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে।