১৯৯৭ সালে ‘এয়ার বেকিন’ নামে হাজার হাজার স্নিকার বাজারে ছেড়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের ক্রীড়া সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান নাইকি। এ জুতা বাজারে বের হতে না হতেই মুসলিমদের ধর্মানুভূতিতে আঘাত হানে। কারণ জুতায় ‘এয়ার’ শব্দটি এমনভাবে লেখা হয়েছিল তা হুবহু দেখতে আরবিতে লেখা ‘আল্লাহ’ শব্দের মতো।
ওই সময় প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে যুক্তি হিসেবে জানানো হয়, অত্যন্ত নিখুঁতভাবে লোগোর ডিজাইনটা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, যার কারণে লেখাটি এমন দেখাচ্ছে। পরে অবশ্য ওই জুতা বাজার থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।
আবার একই কাজ করল প্রতিষ্ঠানটি। এবার ‘এয়ার ম্যাক্স ২৭০’ ট্রেইনার মডেলের জুতায় লোগো এমনভাবে ব্যবহার করা হয়েছে যে দেখতে আরবি হরফে আল্লাহ মনে হবে। এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুসলমানরা। অচিরেই বাজার থেকে এই জুতা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন তারা। এ ঘটনাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ এনে পিটিশন চালু করেছেন সাইকা নোরেন নামের এক নারী। পিটিশন চালুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ৫০ হাজার ব্যক্তি এতে স্বাক্ষর করেছেন।
মিসেস নোরেনের ভাষ্য, জুতা সাধারণত নোংরা বস্তু বলেই বিবেচিত করা হয়। কারণ এটি মাটিকে স্পর্শ করে এবং দেহের সবচেয়ে নিমের অংশেই এটি ব্যবহৃত হয়। এমতাবস্থায় জুতার লোগোতে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ শব্দকে ফুটিয়ে তোলা মানে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা এবং ইসলামকে অবজ্ঞা করা।
‘ইসলাম আমাদের সবার প্রতি সহানুভূতি ও উদারতা দেখানো এবং সবক্ষেত্রে সুবিচার প্রতিষ্ঠার শিক্ষা দেয়। এমতাবস্থায় আমরা প্রতিষ্ঠানটিকে বলতে চায়, অচিরেই বাজার থেকে ইসলামকে অবজ্ঞাসূচক এই জুতা প্রত্যাহার করে নেয়া হোক। এ ছাড়া ভবিষ্যতে লোগোর ডিজাইন তৈরির সময় যাতে বিষয়টি মাথায় রেখে কাজ করা হয় সেই অনুরোধও করছি আমরা।’
১৯৯৭ সালের ঘটনা উল্লেখ করে নোরেন প্রশ্ন তুলেছেন-‘ওই সময় তাদের তৈরি এয়ার বেকিন মডেলের স্নিকারের লোগোতে ‘আল্লাহ’ শব্দটি ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল। এ সময় তারা যুক্তি দিয়ে বলেছিল, ডিজাইনটা অত্যন্ত সুক্ষা করতেই ঘটনাক্রমে এমনটা হয়ে যেতে পারে। যদি তা-ই হয় তাহলে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি কেন হলো?’
নাইকির একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘নাইকি সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা দেখায় এবং এই বিষয়গুলো আমরা খুব সতর্কতার সঙ্গে দেখে থাকি। নাইকির এয়ার ম্যাক্স লোগোটি আসলে এয়ার ম্যাক্স ট্রেডমার্কের স্টাইলিশড প্রতিনিধিত্ব করে। এর মাধ্যমে শুধু এয়ার ম্যাক্স ব্র্যান্ডকেই বোঝানো হয়েছে। ইচ্ছাকৃতভাবে অন্য কিছু বোঝাতে বা কাউকে আঘাত দিতে এটা করা হয়নি।’