বাইরে তাপমাত্রা মাইনাস ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ দিকে রানওয়েতে আটকে আছে বিমান। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ রয়েছে বিমান চলাচল। আর এতে নাজেহাল অবস্থা হল ২৫০ যাত্রীর। ঠাণ্ডায় জবুথবু অবস্থায় ১৬ ঘণ্টা বিমানে বসে রইলেন তাঁরা। তাও আবার অভুক্ত অবস্থায়। কানাডার গুজ বে বিমানবন্দরে সম্প্রতি এমনই অভিজ্ঞতা হল বিমানযাত্রীদের।
২৫০ যাত্রী ও বিমানকর্মীদের নিয়ে স্থানীয় সময় দুপুর ৩টায় নিউইয়র্ক থেকে হংকংয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় মার্কিন বিমান সংস্থা ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স-এর বিমানটি। সন্ধ্যার দিকে মাঝ আকাশে আচমকাই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এক যাত্রী। বিপদ বুঝে কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ডের গুজ বে বিমানবন্দরে বিমানটির জরুরি অবতরণ করেন পাইলট। তড়িঘড়ি ওই অসুস্থ যাত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আর ঠিক তার পরই বাধে বিপত্তি।
প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় বিমানের দরজা আটকে যায়। কোনওভাবেই সেটি বন্ধ করা যায়নি। অন্য দিকে রাত হয়ে যাওয়ায় বিমানবন্দরে দরজা ঠিক করার কাউকে পাওয়া যায়নি। শুল্ক ও অভিবাসী কর্মকর্তা না থাকায় বিদেশি যাত্রীদের কানাডার মাটিতে নামানোর অনুমতিও মেলেনি। বাধ্য হয়ে বিমানের মধ্যেই রাত কাটাতে হয় যাত্রীদের। অন্য একটি বিমানে যাত্রীদের নিউইয়র্ক ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা উঠলেও, রাতের মধ্যে তার ব্যবস্থা করা যায়নি।
বিমানের দরজা খোলা থাকায় কনকনে ঠাণ্ডায় এমনিতেই জবুথবু অবস্থা হয়েছিল যাত্রীদের। তার মধ্যে আবার খাবার নিয়েও টানাটানি দেখা দেয়। টুকটাক বিস্কুট-চিপসের জোগান দিলেও, আড়াইশো যাত্রীর খিদে মেটাতে ব্যর্থ হন বিমানসেবিকারা। তাই অভুক্ত অবস্থাতেই রাত কাটে যাত্রীদের।
রবিবার সকালে দরজা সারানোর কাজ শুরু হয়। তবে কয়েক ঘণ্টা কেটে গেলেও সেটি ঠিক করা যায়নি। নিউইয়ার্ক থেকে দ্বিতীয় বিমানটি এসে পৌঁছতে দুপুর গড়িয়ে যায়। যদিও বা এসে পোঁছায়, কিন্তু তাতে উঠেও খাবার পাননি যাত্রীরা। রবিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় নিউইওয়ার্ক ফিরে আসেন তাঁরা।
গোটা ঘটনায় ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের উপরই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন যাত্রীরা। জরুরি পরিস্থিতি সামাল দিতে যথেষ্ট বন্দোবস্ত না থাকায় সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের সমালোচনায় সরব হয়েছেন অনেকেই। ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের মুখপাত্র ন্যাটালি নুনান গোটা ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে আখ্যা দিয়েছেন। বিমান ভাড়া ফিরিয়ে দেওযার পাশাপাশি ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি।