Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

saloonঅভাবের কারণে মানুষকে অনেক কিছুই করতে হয়। আর তিনি যদি হন নারী, তাহলে প্রতিবন্ধকতা যেন আরো বেশি। আমাদের রক্ষণশীল সমাজ এখনো নারীদের অনেক কাজ করাকে স্বীকৃতি দিতে চান না। তবুও তারা থেমে থাকতে রাজি নন। কৌশলে কোন না কোন কাজ ঠিকই করে যাচ্ছেন।

সামাজিক বিধি-নিষেধের কারণে নিজেদের লম্বা চুল কেটে, ছেলেদের পোশাক পরে সেলুনে অন্যের চুল-দাড়ি কাটছেন তারা। এমনকি পারিবারিক নামও বদলে ফেলেছেন এই দুই বোন। ভারতের উত্তর প্রদেশের দুই কিশোরী এমন সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছেন। এছাড়া তাদের আর কোন রাস্তা খোলা ছিল না। আর এভাবেই কেটে গিয়েছে ৪ বছর।

chardike-ad

জানা যায়, ২০১৪ সালে জ্যোতি ও নেহা কুমারীর বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাবার সেলুনটিই তাদের পরিবারিক আয়ের একমাত্র উৎস। ফলে উপায় না দেখে দুই বোন রাতারাতি একটি কৌশল অবলম্বন করেন। নিজেদের চুল ছেলেদের মতো করে কেটে, জিন্স পরে, হাতে ব্রেসলেট নিয়ে তারা সেলুনে কাজ শুরু করেন। শুধু তা-ই নয়, নিজেদের নাম পরিবর্তন করে নাম রাখেন দীপক ও রাজু।

১৮ ও ১৬ বছরের দুই কিশোরীর এমন কৌশলের কারণ একটাই। ভারতের উত্তর প্রদেশের ওই গ্রামে কোন পুরুষ নারীদের কাছে চুল-দাড়ি কাটেন না। তাই গত ৪ বছর যাবত জ্যোতি ও নেহা পুরুষ সেজে বাবার সেলুনটি সাফল্যের সঙ্গেই চালিয়ে যাচ্ছেন।

এলাকাবাসী জানায়, এভাবেই সেলুন চালানোর সঙ্গে সঙ্গে তারা নিজেদের লেখাপড়াও চালিয়ে যাচ্ছেন। সকালে স্কুল করে এসে দুপুরের দিকে সেলুন খুলতেন তারা। এতে দিনে ৪০০ টাকা আয় হয় সেলুন থেকে। যদিও গ্রামে তাদের পরিচয় গোপন রাখা হতো। তা না হলে তাদের আয় বন্ধ হয়ে যেত।

সম্প্রতি ভারতের গোরক্ষপুরের একটি হিন্দি দৈনিকে তাদের এ সংগ্রামের কাহিনি প্রকাশ করা হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ভারত সরকারের দৃষ্টি পড়ে দুই বোনের ওপর। পরে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সম্মান জানানো হয়। সরকারি কর্মকর্তা অভিষেক পান্ডে জানান, দুই বোনের সংগ্রামের কাহিনি অন্যদেরও উদ্বুদ্ধ করবে। তবে খুশির খবর হচ্ছে- এসব জানাজানি হওয়ার পরেও তাদের খরিদ্দার কমে যায়নি। তারা তাদের ত্যাগ না করে বরং সহযোগিতা করছেন।