তুরস্কের অর্থনীতি ধ্বংস করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার টুইটারে দেওয়া পোস্টে তিনি বলেন, সিরিয়ার কুর্দি বিদ্রোহীদের ওপর হামলা চালানো হলে যুক্তরাষ্ট্র তুরস্কের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেবে। তবে কুর্দিরাও যেন তুরস্ককে উসকানি না দেয়।
টুইটারে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প বলেন, সিরিয়ায় আইএসের খিলাফত সামান্যই অবশিষ্ট রয়েছে। ফলে দেশটি থেকে মার্কিন সেনাদের সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তুরস্ক যদি কুর্দিদের ওপর আঘাত করে তাহলে তাদের অর্থনীতি ধ্বংস করে দেওয়া হবে। তবে আমি চাই, কুর্দিরাও যেন তুরস্ককে উসকানি না দেয়।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকো’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দেশটির কোনও ন্যাটো মিত্রকে এ ধরনের হুঁশিয়ারি দেওয়ার ঘটনা ইতিহাসে বিরল।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও মন্তব্য করেন, তার দেশ সিরিয়া সীমান্ত নিয়ে তুরস্কের উদ্বেগের বিষয়টি অনুধাবন করতে পারছে। দেশটি তার সীমান্ত ও জনগণকে সুরক্ষিত রাখতে চায়। শনিবার সৌদি অর্থায়নে পরিচালিত আল আরাবিয়া টেলিভিশন’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
এদিকে সিরিয়া ইস্যুতে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু’র সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। এ সময় দুই নেতা সিরিয়ার সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন।
সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ট্রাম্পের ঘোষণার পর এ ইস্যুতে ইসরায়েলসহ যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোকে আশ্বস্ত করতে মধ্যপ্রাচ্য সফর করছেন মাইক পম্পেও। গত ৮ জানুয়ারি শুরু হওয়া এ সফরে মধ্যপ্রাচ্যের নয়টি দেশ সফরের কথা রয়েছে তার। দেশগুলো হচ্ছে জর্ডান, ইরাক, মিসর, সৌদি আরব, কাতার, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান ও কুয়েত। এ সফরের মধ্যেই তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সিরিয়া পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন মাইক পম্পেও।
অন্যদিকে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন, সিরিয়া থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহার করা না হলে সশস্ত্র কুর্দি বিদ্রোহী গোষ্ঠী ওয়াইপিজি’র বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালাবে আঙ্কারা। তুর্কি টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
মেভলুত কাভুসোগলু বলেন, তুর্কিরা কুর্দিদের ওপর গণহত্যা চালাবে এমন হাস্যকর অজুহাত দেখিয়ে যদি মার্কিন সেনা প্রত্যাহার বন্ধ করে দেওয়া হয় তাহলে আমরা অভিযানের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবো।
তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আঙ্কারা নিজস্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী অগ্রসর হবে। আঙ্কারা ময়দানে এবং আলোচনার টেবিলে দুই জায়গাতেই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সময়মতো সিদ্ধান্ত নেবো এবং এজন্য কারও কাছ থেকে অনুমতি নেবো না।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান-ও সিরিয়ার কুর্দি বিদ্রোহী গোষ্ঠী ওয়াইপিজি’র সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠতার কঠোর সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র তাদের (ওয়াইপিজি) ভালোভাবে চেনেও না। এই সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো আমার কুর্দি ভাইদের প্রতিনিধিত্ব করে না। আমেরিকা যদি মনে করে থাকে যে, এই দলগুলো আমার কুর্দি ভাইদের প্রতিনিধিত্ব করে তাহলে তারা মারাত্মক ভুল করছে।’ সূত্র: সিএনএন, পলিটিকো।