সবশেষ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) ক্রিকেটে কয়েকটি ম্যাচেই শেষ ওভারে গিয়ে নিজ দল মুম্বাই ইন্ডিয়ানসকে জেতাতে পারেননি বাঁহাতি কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। ফলে সে টুর্নামেন্টের পর থেকে শেষ ওভারে ভালো করতে না পারার অপবাদ জুটে যায় তার নামের পাশে।
কিন্তু মোস্তাফিজ যে শেষ ওভারে কিংবা শেষদিকের ওভারে ভালো করতে পারেন সেই প্রমাণ রেখেছেন আইপিএলের আগে শ্রীলঙ্কায় হওয়া নিদাহাস ট্রফিতে, আইপিএলের পরে দুবাইতে হওয়া এশিয়া কাপেও। এবার তিনি নিজের স্লগ ওভারের পারদর্শীতার ছাপ রাখলেন বিপিএলের ম্যাচেও।
চলতি আসরে অন্য ছয় দলের তুলনায় বেশ দুর্বলই হয়েছে মোস্তাফিজুর রহমানের দল রাজশাহী কিংস। তরুণ মেহেদি হাসান মিরাজকে অধিনায়ক ঘোষণা করে সবাইকে চমকেও দিয়েছিল ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। দলের প্রথম জয়ে ছিলো মিরাজের অগ্রণী ভূমিকা, দলের দ্বিতীয় জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন মোস্তাফিজুর রহমান।
আজ (রোববার) বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রংপুর রাইডার্সকে ৫ রানে হারিয়ে দিয়েছে রাজশাহী। প্রথম ইনিংস শেষে রাজশাহীর সংগ্রহ যখন মাত্র ১৩৫, তখনই মূলত ম্যাচ শেষ হয়ে যায় অর্ধেক। ক্রিস গেইল, রিলে রুশো, রবি বোপারাদের সামনে ১৩৬ রানের এই লক্ষ্য মামুলিই হওয়ার কথা ছিলো।
সে পথে ঠিকঠাক এগুচ্ছিলোও রংপুর। কিন্তু তাদের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়ে যান কাটার মাস্টার ‘দ্য ফিজ’। রিলে রুশো, মোহাম্মদ মিঠুন আর নাহিদুল ইসলামদের ব্যাটে জয়ের পথে এগিয়ে যাচ্ছিলো বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
মাঝে ছন্দপতন ঘটলেও শেষে গুছিয়েই নিয়েছিল তারা। জয়ের জন্য রংপুরের শেষ ওভারে দরকার পড়ে ৯ রান। মারকাটারি টি-টোয়েন্টির যুগে এ রান বিশেষ কিছু নয়। তার উপরে স্ট্রাইকে তখন চলতি আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক রিলে রুশো। বোলিংয়ের দায়িত্ব বর্তায় মোস্তাফিজের কাঁধে। যিনি ১৮তম ওভারে মাত্র ৪ রান দিয়ে জমিয়ে তোলেন ম্যাচ।
ফুল লেন্থের বল ভালো খেলেন বুঝতে পেরে রুশোকে প্রথম বলটা শর্ট লেন্থে করেন মোস্তাফিজ। দেখেশুনে পুল করলেও সেটি সরাসরি চলে যায় ফিল্ডারের হাতে, এক রান নিয়ে স্ট্রাইক ছাড়েন রুশো। এরই সাথে যেনো ম্যাচটিও ছুটে যায় রংপুরের হাত থেকে। পাঁচ বলে তখন প্রয়োজন ৮ রান।
রুশো আবার যখন শেষ বলে স্ট্রাইকে আসেন তখন রংপুরের লক্ষ্যটা ছিলো ১ বলে ৭ রান। অর্থাৎ মাঝের ৪ বল থেকে মাত্র ১ রান দেন মোস্তাফিজ, সেটিও বাই রানের সুত্রে। স্ট্রাইকে থাকা ব্যাটসম্যান ফরহাদ রেজা মোস্তাফিজের টানা ৪টি কাটারের ১টিও ব্যাটে লাগাতে পারেননি।
শেষ পর্যন্ত না পেরে ওভারের পঞ্চম বলে বাই রান নিয়ে স্ট্রাইকে আসেন রুশো, তখন জয় পাওয়া অসম্ভব। টাই করে সুপার ওভারে যেতে হলেও হাঁকাতে হবে ছক্কা। সামনে তখন দুর্দান্ত বোলিং করতে থাকা মোস্তাফিজ।
শেষ বলে অসাধারণ দক্ষতায় ব্লক হোলে বোলিং করেন মোস্তাফিজ। যে বল থেকে মাত্র ১ রান নিতে সক্ষম হন রুশো। তিনি অপরাজিত থাকেন ৪৪ রান করে, মোস্তাফিজ রাজশাহীর হয়ে ম্যাচ জিতে নেন ৫ রানের ব্যবধানে।
সবমিলিয়ে এ ম্যাচে মোস্তাফিজের বোলিং ফিগার ছিলো ৪-০-১৭-০। শেষ ওভারে মাত্র ৩ রান দেয়ার আগে ১৮তম ওভারে নিজের তিন নম্বর ওভার করতে এসে তিনি খরচ করেন মাত্র ৪ রান। এর আগে নিজের প্রথম ২ ওভারে ১২ রান দিয়েছিলেন তিনি।