বেশ কিছু ক্যানসারের লক্ষণ প্রকাশেই সতর্ক হওয়া সম্ভব। দুরারোগ্য ক্যানসারের হানায় সভ্যতার কপালে ভাঁজ আরও গভীর হচ্ছে। অথচ পুরোপুরি জয় করা যাচ্ছে না এই মারণ ব্যাধিকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ সালে বিশ্বে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষ এই অসুখের শিকার হয়েছেন। ক্যানসার এমন এক অসুখ, যা যত তাড়াতাড়ি ধরা পড়বে, প্রাণের ঝুঁকি কমবে ততই। চিকিৎসকদের মতে, এই অসুখ ধরা পড়তেই অনেকটা সময় পেরিয়ে যায় বলেই এতে মৃত্যুহার বাড়ে।
ক্যানসার শরীরে হানা দেওয়ার পর কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। সেসব জানা থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে এবং পরামর্শ মতো সাবধান হলে তা কাটিয়ে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বেশির ভাগ সময়ই এসব ছোটখাটো আকারে সামনে আসা সমস্যা আমরা অবহেলা করি বলেই আমাদের অজ্ঞাতেই মারণ ব্যাধির কামড় ছড়িয়ে পড়ে শরীরে।
ওজন হ্রাস
হঠাৎই কমে যাচ্ছে ওজন? ডায়েট মেনে, শরীরচর্চা করে ওজন হ্রাস স্বাভাবিক হলেও, দ্রুত ও অস্বাভাবিক হারে ওজন কমে গেলে খুশি হওয়ার কোনো কারণ নেই। তখনই পরামর্শ নিন চিকিৎসকের। শরীরের তলদেশ, মূলত কোলন ক্যানসারের অন্যতম লক্ষণ এই ওজন কমে যাওয়া।
মূত্রে রক্ত
শরীরের ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেড়ে গেলেও মূত্রের সঙ্গে রক্ত বের হয়; কিন্তু ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষার পর তা স্বাভাবিক আছে, অথচ মূত্রে রক্ত আসছে- এমনটা হলে আর অপেক্ষা করবেন না। কিডনিতে ক্যানসার হলেও এই লক্ষণ প্রকাশ পায়।
মলের রং
কোনো ওষুধের প্রভাব ছাড়াই মলের রং ও গন্ধে পরিবর্তন আসছে কি? প্রতি দিন নজর রাখুন সেটা। অনেক সময় খাওয়া-দাওয়ার মান ও নানা সবজির প্রভাবে মলের রং কালচে হয়। কিন্তু স্বাভাবিক খাওয়া-দাওয়ার পরেও পর পর কয়েক দিন তা কালচে ও অতিরিক্ত দুর্গন্ধযুক্ত হলে চিকিৎসকের কাছে যান। রেনাল ক্যানসার ও লিভার ক্যানসারের ক্ষেত্রে এমন লক্ষণ প্রকাশ পেতেই পারে।
পেলভিক অংশে ব্যথা
দিনের পর দিন কিডনির নিচে পেলভিক খাঁচায় ব্যথা হলে প্রয়োজনীয় পরীক্ষাগুলো আগে করান। সারভাইক্যাল ক্যানসারের শুরু পেলভিকের খাঁচায় ব্যথা দিয়েই। কোনো পুরনো আঘাত বা অস্থিজনিত কারণে ব্যথা হলে কোনো চিন্তা নেই। দিন কয়েক ওষুধ খেয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চললে ব্যথা কমলে অত ভয়ের নেই। কিন্তু এই ব্যথা ঘন ঘন ফিরে এলে ও ওষুধ বন্ধের পরেই ফের মাথাচাড়া দিলে সাবধান হোন।
মাংসল বৃদ্ধি
শরীরের যে কোনো অংশে, বিশেষ করে বগল ও স্তনে কোনো অস্বাভাবিক মাংসল বৃদ্ধি আসছে কি-না খেয়াল করুন রোজ। এমনটা হলে সময় নষ্ট না করে চিকিৎসকের কাছে যান। কোনো মাংসল বৃদ্ধির জায়গা অবশ হয়ে থাকলে তা স্তন ক্যানসার বা শরীরের কোনো লসিকাগ্রন্থিতে ক্যানসারের লক্ষণ।
রক্তপাত
মহিলাদের ক্ষেত্রে জরায়ুর ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণই এটি। দুই পিরিয়ডের মাঝে ঘন ঘন রক্তপাত হয়? বা মেনোপজ হয়ে গেলেও সামান্য হলেও রক্তপাত হচ্ছে কি ফের? মোটেই হেলাফেলার বিষয় নয় তা। এমনটা হলেই সাবধান হোন ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
পাঁজর ভাঙা যন্ত্রণা
শরীরে কোথাও আঘাত লাগলে বা সামান্য খাটাখাটনিতেই এত ব্যথা হয় যে মনে হয়, পাঁজর ভেঙে যাচ্ছে? হাড়ের ভেতরে কোনো টিউমার থাকলে এমনটা হয় অনেক সময়। তাই সেই টিউমার ক্যানসারপ্রবণ কি না, তা যাচাই করে নিন দ্রুত।
(ঢাকাটাইমস/১২জানুয়ারি/এজেড)