Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

austrella-abu-sinaঅস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিসহ একদল বিজ্ঞানী দীর্ঘ সাধনায় ক্যানসার শনাক্তকরণের প্রাথমিক পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। সাধারণ রক্ত পরীক্ষায় ক্যানসার শনাক্ত হবে। আর এজন্য সময় লাগবে আনুমানিক দশ মিনিট।

গবেষণার নেতৃত্বে তিনজন অস্ট্রেলিয়ান বিজ্ঞানী পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চ ফেলো ডক্টর লরা কারাসকোসা, প্রফেসর ম্যাট ট্রাউ এবং ড. ইবনে সিনা। আর এই দলের একজন হচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশি ড. আবু সিনা।

chardike-ad

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের এই সহকারী অধ্যাপক কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অস্ট্রেলিয়ান ইনস্টিটিউট ফর বায়োইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড নানোটেকনোলোজি থেকে বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পিএইচডি সম্পন্ন করতে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমান।

অস্ট্রেলিয়ার গবেষকরা বলছেন, তারা সাধারণ রক্ত বা বায়োপসি কোষ থেকে সব ধরনের ক্যানসার শনাক্ত করার দ্রুত এবং সহজ পরীক্ষা তৈরি করেছে। যা মোবাইল ফোনের মতো সহজ ডিভাইসগুলোর মাধ্যমেও রোগীর ক্যানসার নির্ণয় করা যাবে।

কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকরা একটি অনন্য ডিএনএ ন্যানো গঠন করেছে যা এক্ষেত্রে কার্যকারী হবে। নতুন পরীক্ষায় এমন একটি সরঞ্জাম রয়েছে যা গবেষণাগার অনুযায়ী, ১০ মিনিটের মধ্যে পুরো জিনোম পর্যায়ে প্যাটার্ন পরিবর্তনের বিশ্লেষণে সহায়তা করতে সক্ষম।

abu-sinaগবেষকরা জানায়, ২০০টি মানব ক্যানসার নমুনা এবং স্বাভাবিক ডিএনএ পরীক্ষা করে ৯০ শতাংশ সঠিক পরীক্ষায় পরিণত হয়েছে। আরো হাজারখানেক নমুনা নিয়ে কাজ করবে। আর কাজটি শেষ হতে আরো ৪/৫ বছর সময় লাগতো পারে। গবেষণা জার্নালটি ‘নেচার কমিউনিকেশন্স’ এ প্রকাশিত হওয়ার পর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে ব্যাপক সাড়া জাগে।

বিশ্বব্যাপী ঘাতক ব্যাধি ক্যানসার রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে এ রোগে মানুষের মৃত্যুর হার দ্বিতীয়। ভবিষতে এই পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বলে এই বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন।

গবেষক ডা. আবু আলী ইবনে সিনা বলেন, রোগীর ক্যানসার নির্ণয়ে আমরা প্রত্যেক প্রকারের প্রোস্টেট, কলোরেক্টাল, লিম্ফোমা ও স্তন ক্যান্সারসহ আলাদা আলাদা পরীক্ষা করে থাকি। কিন্তু নতুন পদ্ধতিতে একই টেস্টে সবকিছু বের হয়ে আসবে। ক্যানসার নির্ণয়ে এই টেস্টটির পদ্ধতি খুবই সহজ ও সাশ্রয়ী হবে।

দুই ধরনের পদ্ধতিতে ক্যানসার শনাক্ত করা যাবে- একটি হচ্ছে খালি চোখে এবং অপরটি হচ্ছে ইলেক্ট্রোকেমিক্যাল বা তড়িৎ রসায়ন পদ্ধতিতে। কারেন্ট সিগন্যাল মেপে এক ধরনের মেশিনের মাধ্যমে এই পরীক্ষা করা সম্ভব। ভবিষ্যতে হয়তো এই মেশিনটি আরও ছোট আকারে তৈরি করা হবে।

পদ্ধতিতে ক্যানসার থাকলে অরেঞ্জ কালার পরিবর্তন হবে না। যদি ক্যানসার না থাকে তাহলে এটা নীল রঙে পরিবর্তন হবে বলে তিনি জানান। বলেন, ‘দীর্ঘ সাধনায় ক্যানসার শনাক্তকরণের প্রাথমিক এই পদ্ধতি আমরা আবিষ্কার করতে পেরেছি। এটি সত্যিই আকর্ষণীয় বলে মনে হয়।’

আবু সিনা বলেন, মানবদেহের ডায়াবেটিকের পরিমাণ নির্ণয়ের মতই সাধারণ রক্ত পরীক্ষায় মিলবে ক্যানসার উপস্থিতির তথ্য। একজন বাংলাদেশি হিসেবে এই গবেষণার সাফল্য যদি তিনি দেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারেন তাহলে সেটাই হবে তার সত্যিকারের সাফল্য।

সৌজন্যে- জাগো নিউজ