ধোঁয়া ওঠা পিস্তল হাতে দাঁড়িয়ে আছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। কিম তাকিয়ে আছেন লাল কার্পেটে ধরাশায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিথর শরীরের দিকে। পাশে রাখা একটি ব্যাগ থেকে উপচে পড়ছে মার্কিন ডলার। কিমের পিছনে জ্বল জ্বল করছে নিওন সাইনে লেখা ‘দ্যা শো মাস্ট গো অন।’
চমকে উঠলেও এই দৃশ্য শিল্পীর কল্পনাপ্রসূত রূপ ছাড়া কিছু নয়। কোরীয় দ্বীপ ঘিরে কূটনৈতিক টানাপোড়েনের ব্যঙ্গাত্মক বহিঃপ্রকাশ দেখা গেল দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলের এক প্রদর্শনীতে।
সিঙ্গাপুরে ঐতিহাসিক বৈঠকের আগে পর্যন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও উত্তর কোরীয় নেতা পরস্পরের বিরুদ্ধে দীর্ঘ কয়েক মাস যে বাকযুদ্ধে মেতেছিলেন, বছর শেষে তাকেই তির্যক ভাবে পেশ করলেন দক্ষিণ কোরিয়ার শিল্পী লি ইয়াং সান।
৫৯ বছরের লিম সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে জানিয়েছেন, ‘আমি শুধু দেখাতে চেয়েছি, কোন রাজনৈতিক বাস্তবতার মধ্যে আমরা বাস করছি। বিরোধপূর্ণ দুই দেশের নেতাদের কথার লড়াই প্রতি মুহূর্ত যে কোনও সিনেমার চেয়ে কম চিত্তাকর্ষক নয়। তাদের প্রতি পদক্ষেপ দেখে কখনও উদ্বিগ্ন, কখনও উত্তেজিত আবার কখনো বা আনন্দিত হয় দেশবাসী।’
লিমের এই শিল্পকর্মটি গড়ে উঠেছে একটি গল্পকে কেন্দ্র করে। যেখানে কিম ও ট্রাম্পকে দুই বন্ধু হিসেবে দেখানো হয়েছে, যারা অর্থ নিয়ে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। ট্রাম্প কিমের থেকে উচ্চ হারে সুদ দাবি করলে ক্ষিপ্ত উত্তর কোরীয় নেতা তাকে গুলি করে খুন করেন।
লিমের বক্তব্য, ‘দুই নেতাই রাজনৈতিক প্রদর্শনীতে দক্ষ এবং নিজেদের ঝগড়া থেকে তৈরি হওয়া টান টান আবহ কাজে লাগাতে ওস্তাদ। কিন্তু দু’জনের মধ্যে বোধহয় একটা জিনিসের অভাব। তা হল দায়িত্বজ্ঞান সম্পর্কে ধারণা।’
গত সপ্তাহে শুরু হওয়া প্রদর্শনীটি গত বুধবার শেষ হয়েছে। কয়েক হাজার দর্শক ওই প্রদর্শনী দেখতে হাজির হয়েছেন। তবে অনেকেই এমন বীভৎস শিল্পকীর্তির জন্য নির্মাতার উপর বেজায় চটেছেন। কেউ কেউ তো তাকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ‘আপনার মতো মানুষের কারণে এবার বন্ধু দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার সম্পর্কের অবনতি ঘটবে।’
কিন্তু দর্শণার্থীদের এমন মন্তব্যে বিন্দুমাত্র বিচলিত না হয়ে লিম জানিয়েছেন, কিছু দিনের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার অন্যান্য শহরেও তার এই শিল্পকর্মটি প্রদর্শিত হবে।