দক্ষিণ কোরিয়ায় শীত এসেছে প্রায় মাস খানেক আগে। এখন কনকনে শৈত্য প্রবাহ চলছে পুরো দেশ জুড়ে। তবে চলতি সপ্তাহে বিভিন্ন প্রদেশে তুষারপাত শুরু হয়েছে। তুষারপাতে ঢাকা পড়তে শুরু করেছে পাহাড় পর্বতমালা। শীতের আগমনে কোরিয়ার পাহাড়-পার্বতগুলো মনে হয় সাদা চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছে। বৈচিত্রময় প্রকৃতির মাঝে এসব উচু উচু পাহাড় ধবধবে সাদা রূপ নিতে শুরু করেছে, এখন পুরো কোরিয়া জুড়ে শুভ্র সাদা ময়।
ইতোমধ্যে কোরিয়ার সবচেয়ে বড় পর্বতমালা হাল্লাসান, জিরিসান, সরাকসান পাহাড়গুলো তুষার বরফে ঢাকা পরেছে। শীতের অসাধারণ দৃশ্য দেখতে ইতোমধ্যে দেশি-বিদেশী পর্যটকরা ভীড় জমাতে শুরু করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ায়। এই দেশে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে তুষারপাত সব সময়ই বেশ রোমাঞ্চকর। তুষারপাত মানেই হিম ঠান্ডাকে উপেক্ষা করে তুষারপাত উপভোগ করা। অনেকেই ছবি তুলে ফেসবুকে আপলোড দিয়ে স্মৃতির অ্যালবামে তুষারপাতকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে দেখা যায়।
বরফ আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য শুধু মানুষের মনের খোরাকই জোগায় না,অর্থনৈতিক ভাবেও একটি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যায় বহুদূর তার বাস্তব প্রমাণ দক্ষিণ কোরিয়া। শীতপ্রধান দেশ হওয়ায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে পুঁজি করে দাঁড় করিয়েছে শক্তিশালী পর্যটন শিল্প। পাশ্চাত্য সংস্কৃতির অন্ধ অনুকরণ নয়, কোরিয়ায় পর্যটনের মূল আকর্ষণ নিজ দেশের সংস্কৃতি। তুষারপাতের নান্দনিক সৌন্দর্য্যের কারণে প্রতি বছরই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটক আসেন দক্ষিণ কোরিয়াতে। এই শীতে বরফ প্রেমীরা বরফে স্নোবোর্ড-স্কি খেলার প্রস্তুতি নিয়ে থাকে। উল্লেখ্য কোরিয়ার ভুমির প্রায় ৮০ শতাংশই পাহাড়ে আচ্ছাদিত, প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যবর্তী এ দেশটি সাগর আর পাহাড়ের অপরূপ মিলন মেলায় নৈসর্গিক দৃশ্যপট এঁকে থাকে পুরো বছর জুড়েই। শীতে প্রকৃতির এ রূপ সৌন্দর্যকে বরফ প্রেমিরা দারুণ ভাবে উপভোগ করে থাকে। শুধু কোরিয়ান নাগরিকরা নয় বিশ্বের লাখো পর্যটক এসময় উপভোগ করে তৃষার পাতের নয়নাভিরাম দৃশ্য।
কোরিয়ায় পর্যটকদের আকর্ষণের জন্য নির্মাণ করা হয় স্পেশাল বরফের হোটেল। বেশ কিছু পর্যটক স্পটে এসব হোটেল তৈরী করা হয়। বিশ্বজুড়ে বরফের বেশ কয়েকটি হোটেল রয়েছে। এর মধ্যে বেশ কিছু পর্যটন স্পটে এসব হোটেল তৈরী করা হয়। এছাড়া ফিনল্যান্ড,নরওয়ে, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে বরফ ও তুষারের হোটেল রয়েছে।
আর কিছুদিন পরেই কেরিয়ায় বিভিন্ন অঞ্চলে বরফ ফেস্টিভ্যাল শুরু হবে। এছাড়া কোরিয়ায় সর্বত্র চলবে স্নোবোটিং ও স্কি খেলার জমজমাট আসর, বরফের মধ্যে কোরিয়ানরা খেলাটি দারুণ উভোগ করে থাকে,অনেক বিদেশীরাও স্নোবোটিং ও স্কি খেলা দেখতে দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন স্পটে সামিল হয়।
মোহাম্মদ আল আজিম, সাংবাদিক, কোরিয়া প্রবাসী।