আমেরিকা যাওয়া হলো না সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কর্মচারী জাহিদুল ইসলাম জাহিদের (৩২)। পাওনা টাকা নিতে আসায় পাওনাদারকে ভাড়াটে কিলার দ্বারা কুপিয়ে হত্যা করা হয় জাহিদকে। ঘটনাটি ঘটেছে যশোরের শার্শা উপজেলার কাজিরবেড় গ্রামে।
বৃহস্পতিবার ভোররাতে কাজিরবেড় গ্রামের একটি কলাবাগান থেকে জাহিদের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারী জাহিদুল ইসলাম জাহিদ বেনাপোল পোর্ট থানার নারায়নপুর গ্রামের আব্দুর জব্বার তরফদারের ছেলে এবং বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট সেজুতি এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত একই পরিবারের পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্বজনেরা জানান, জাহিদ আমেরিকা যাওয়ার জন্য ৪ লাখ টাকা দেয় আদম ব্যাপারি কাজিরবেড় গ্রামের ঝড়ু দালালের স্ত্রী বিউটি খাতুনকে। পরে বিদেশ না পাঠিয়ে টালবাহনা শুরু করে।
এ ঘটনায় বুধবার রাতে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে বাড়িতে ডেকে নেয় জাহিদকে। পূর্বপরিকল্পিতভাবে বিউটি যশোর থেকে চারজন ভাড়াটে খুনি এনে বাসায় সাউন্ড বক্সে গান বাজনা শুনতে থাকে। পরে জাহিদকে বাথরুমে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে লাশটি বস্তাবন্দি করে পাশের একটি কলাবাগানে ফেলে দেয়।
রাতে বাসায় না ফেরায় জাহিদের বাড়ির লোকজন খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে বিউটির বাসায় এসে জানতে চাইলে সে বলে বাড়িতে জাহিদ আসেনি। ঘটনাটি সন্দেহ হলে শার্শা থানা পুলিশকে অবহিত করে জাহিদের পরিবার। বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ এসে জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারে তাকে খুন করা হয়েছে। পরে বাড়ির পাশ থেকে মরদেহ উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ জড়িত থাকার অপরাধে ছয়জনকে আটক করেছে।
আটককৃতরা হলো ঝড়ুর স্ত্রী বিউটি খাতুন (৪৭), মেয়ে সুমী খাতুন (২৯), মুক্তার আলীর স্ত্রী রহিমা বেগম (৬৫), খালিদের স্ত্রী ফেরদৌসী (৩৭) ও ছেলে আল-আমিন (১৮)। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ খুনের আলামত উদ্ধার করেছে।
পুলিশ ও এলাকার লোকজন আরো জানায়, বিউটি খাতুন ও মেয়ে সুমী খাতুন বেপরোয়াভাবে চলাফেরা করে থাকে। এমন কোনো অসামাজিক কাজ নেই তারা করে না। এলাকার লোকজন ভয়েতে কিছু বলার সাহস পায় না। এসব নিয়ে প্রতিবাদ করায় ৪ বছর আগে নিজ ছোট সন্তান রুমিকে হত্যা করে লাশ নিজ বাড়িতে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে প্রচার করে মা বিউটি খাতুন ও বড় মেয়ে সুমী খাতুন। এ ঘটনায় শার্শা থানায় একটি মামলা রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম মসিউর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি তারা ভাড়াতে খুনি দ্বারা সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারী জাহিদকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। তার শরীরে অসংখ্য কোপানোর দাগ রয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্যে যশোর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে ওই পরিবারের পাঁচজনকে। ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্যদের আটকের চেষ্টা করা হচ্ছে। আগের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান ওসি।
সৌজন্যে- কালের কণ্ঠ