আসল ইউরোর সঙ্গে কালো কাগজ মিশিয়ে মেশিনের ভেতর রাখলে ২৪ ঘণ্টা পর অধিক পরিমাণে ইউরো বেরিয়ে আসবে। এমন প্রলোভন দেখিয়ে এক ব্যক্তির কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে একটি প্রতারক চক্র। অভিযোগ পেয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বুধবার উত্তরার হাউস বিল্ডিং এলাকা থেকে প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে।
গ্রেফতার দুই প্রতারক হল- আবুল হোসেন ওরফে পংকজ শর্মা ও এলেক্স টেনে ওরফে পেট্রিক। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি প্রাইভেট কার, একটি ইলেকট্রনিক লকার, একটি কাঠের বক্স ও ১২ বান্ডিল কালো কাগজ উদ্ধার করা হয়।
ডিবির সিনিয়র সহকারী কমিশনার মহররম আলী বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
ডিবি পুলিশ জানায়, ছয় মাস আগে রুহুল আমিন নামে এক ব্যবসায়ী কাজের জন্য খিলক্ষেতের একটি অভিজাত হোটেলে যান। সেখানেই প্রতারক চক্রের সদস্যদের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তারা রুহুল আমিনকে জানায়, মুরগির খামার, গরুর খামার এবং তেলাপিয়া চাষ করে অনেক আয় করা সম্ভব।
এমনকি এই মুরগি, গরু এবং তেলাপিয়া ক্যামেরুনে রফতানি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় করা সম্ভব। এসব ব্যবসার পাশাপাশি রুহুল আমিনকে একটি অভিনব মেশিনের কথা জানায় প্রতারকরা। ওই মেশিনে আসল ইউরোর সঙ্গে কালো কাগজ মিশিয়ে রাখলে ২৪ ঘণ্টা পর অধিক পরিমাণে ইউরো বেরিয়ে আসবে।
প্রতারক চক্রের ফাঁদে পা দিয়ে রুহুল আমিন তিন দফায় প্রতারক চক্রের হাতে ৯৬ লাখ টাকা তুলে দেন। এ ঘটনায় রুহুল আমিন ২৮ অক্টোবর বাড্ডা থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলায় আবুল ও পেট্রিককে গ্রেফতার করা হয়। পেট্রিক ক্যামেরুনের নাগরিক। প্রতারক চক্রের আরও দুই সদস্য ক্যামরুনের নাগরিক মাইক ও পিটার পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।
ডিবির একজন কর্মকর্তা জানান, প্রতারক চক্রের সদস্যরা দামি গাড়ি নিয়ে বিভিন্ন সময় রুহুল আমিনের বাড়িতে গিয়ে ব্যবসার বিষয়ে আলোচনা করে। এমনকি প্রতারকরা রুহুল আমিনকে ময়মনসিংহের ত্রিশাল, ভালুকা ও মুক্তাগাছায় কয়েকটি তেলাপিয়া মাছের খামারও দেখায়। পরে রুহুল আমিন প্রথমে ১৮ লাখ টাকা দেন। পরে আরও দুই দফায় প্রায় ৮০ লাখ টাকা প্রতারক চক্রের হাতে তুলে দেন। রুহুল আমিনের করা মামলাটি ডিবি পুলিশে স্থানান্তর হলে দুই প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়।