এক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মত দক্ষিণ কোরিয়ার একটি ট্রেন সীমান্তের ‘ডিমিলিটারাইজ জোন’ অতিক্রম করে উত্তর কোরিয়ায় প্রবেশ করেছে। ওই ট্রেনে করে দক্ষিণ কোরিয়ার বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীদের একটি দল উত্তর কোরিয়া গেছেন বলে জানায় বিবিসি। যারা দেশটির রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা আধুনিকায়নে সাহায্য করবে।
দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের সঙ্গে প্রায় বিচ্ছিন্ন উত্তর কোরিয়া যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বিশ্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপনের কাজ শুরু করেছে, বিশেষ করে প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে।
কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি ফিরিয়ে আনতে দুই কোরিয়ার শীর্ষ নেতা গত বছর থেকে নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছেন। গত এপ্রিলে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন ঐতিহাসিক বৈঠক করেন। বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে টেলি ও রেল যোগাযোগ বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
ওই বৈঠকে কিম দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে তার দেশের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সাহায্য কামনা করেন বলে জানায় বিবিসি। কিম নিজেদের বর্তমান রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাকে যে কোনো দেশের জন্য ‘অস্বস্তিকর’ বলে বর্ণনা করেছিলেন।
উত্তর কোরিয়ার কিছু কিছু রেল অবকাঠামো বিংশ শতাব্দীর শুরু দিকের। তারপর সেগুলোর আর কোনো আধুনিকায়ন হয়নি। দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনরায় চালু করতে উত্তরের রেল ব্যবস্থার আপাদমস্তক সংস্কার প্রয়োজন।
শুক্রবার সকালে রাজধানী সিউলের উত্তরের শহর দোরাসান থেকে প্রকৌশলীদের দলটি নিয়ে ট্রেনটি উত্তর কোরিয়া যাত্রা শুরু করে। স্বল্প সময়ের মধ্যে দুই দেশের সীমান্তে ‘যুদ্ধবিরতি অঞ্চল’ পানমুন স্টেশনে পৌঁছায়। সেখানে উত্তর কোরিয়ার একটি ইঞ্জিন ট্রেনটিকে নিয়ে যায়।
২৮ সদস্যের ওই বিশেষজ্ঞ দলটি আগামী ১৮ দিন উত্তর কোরিয়ায় প্রায় ১২শ কিলোমিটার রেলপথ ভ্রমণ করবে এবং রেলওয়ে অবকাঠামো পরীক্ষা করবে। এই সময়ে ২৪ ঘণ্টা তাদের কার্যক্রম সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।।
বিবিসি জানায়, প্রকৌশলীরা এবার শুধু উত্তর কোরিয়ার রেলপথ ও অবকাঠামো পর্যবেক্ষণ করবে; তারা সেগুলোতে হাত দেবে না। এ যাত্রার জন্য দক্ষিণ কোরিয়াকে জাতিসংঘের ছাড়পত্র নিতে হয়েছে। কারণ, উত্তর কোরিয়ার উপর জাতিসংঘের জ্বালানি ও যন্ত্রপাতি পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা আছে। দক্ষিণ কোরিয়ার একত্রীকরণ মন্ত্রণালয় এই প্রকল্পটির দেখভালের দায়িত্বে আছে।