সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুল গফুর নিখোঁজের ১৭ মাস পর মিলল রহস্য। একইসঙ্গে এ ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন তিনজন। নিখোঁজের পর প্রবাসী গফুরকে হত্যা করে মাটি চাপা দেন তারা।
এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডের পর সিলেটের জৈন্তাপুরে যে এলাকায় লন্ডন প্রবাসীর মরদেহ মাটি চাপা দেয়া হয়েছে সে স্থান চিহ্নিত করেছে পুলিশ। পাশাপাশি মরদেহ উত্তোলনের জন্য আদালতে অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, জগন্নাথপুর পৌর এলাকার বাসিন্দা যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুল গফুর ২০১৭ সালে দেশে আসেন। সিলেট দরগা এলাকায় জৈন্তাপুর উপজেলার সাইট্রাস গবেষণা কেন্দ্রের অফিস সহকারী আবুল কালামের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ২০১৭ সালের ৮ মে আবুল কালাম তার বন্ধু জগন্নাথপুর গ্রামের নুরুল হককে সিলেট দরগা মহল্লার রাজরানী হোটেলে দেখা করার অনুরোধ করেন।
পারিবারিক ব্যস্ততায় নুরুল হক দেখা করতে পারেননি। এরপর প্রবাসী আব্দুল গফুর নিখোঁজ হন। স্বজনরা সব স্থানে খুঁজেও তাকে পাননি। অবশেষে তাকে না পেয়ে গফুরের ভাতিজা লাল মিয়া একটি মোবাইল নম্বর উল্লেখ করে জগন্নাথপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে পুলিশের এসআই হাবিবুর রহমান। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে চেষ্টা চালিয়ে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হন তিনি। গত ২৫ নভেম্বর বিকেলে অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
তারা হলেন- জৈন্তাপুর সাইট্রাস গবেষণা কেন্দ্রের অফিস সহকারী সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর সদর বাহ্মণগাঁও উত্তরপাড়া গ্রামের আবুল কালাম আজাদ (৫২), তার জামাতা জৈন্তাপুর দারুস সুন্নাহ দাখিল মাদরাসার শিক্ষক আনোয়ার হোসেন (৩০) ও জৈন্তাপুর উপজেলার মোকামটিলা গ্রামের মো. জুনাব আলী (৪২)।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে খুনের বিষয়টি স্বীকার করেন তারা। সেইসঙ্গে প্রবাসীকে মাটি চাপা দেয়ার স্থান পুলিশকে দেখিয়ে দেন। পুলিশ স্থানটি চিহ্নিত করে পাহারাদার বসায়।
তাদের দেয়া স্বীকারোক্তিতে সিলেট নগরের দরগা মহল্লার হোটেল রাজরানী থেকে আব্দুল গফুরের মানিব্যাগ এবং গ্রেফতার আবুল কালামের বাড়ি থেকে প্রবাসীর পাসপোর্ট উদ্ধার করে পুলিশ।
জগন্নাথপুর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাবিবুর রহমান বলেন, ১৭ মাস পর আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন এবং মূলহোতাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। টাকার লোভে প্রবাসীকে হত্যা করে মরদেহ জৈন্তাপুর উপজেলার মোকামটিলায় মাটি চাপা দেয়া হয়। আদালতের নির্দেশ পেলে মরদেহ উত্তোলন করা হবে।
জৈন্তাপুর মডেল থানা পুলিশের ওসি খান মো. মাইনুল জাকির বলেন, ঘটনার কারণ এবং রহস্য উদঘাটনে ব্যাপক অনুসন্ধান চালায় পুলিশ। ইতোমধ্যে রহস্য উদঘাটন এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।