তাদের অনেকেই সে দিন জন্ম নেননি। কেউ বা ছিলেন কয়েক বছর, আবার কারও বয়স তখন ছিল কয়েক মাস। কিন্তু মুখে মুখে শোনা ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর ভারতের উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় ষোলো শতকে নির্মিত ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সেই দিনের ভয়ঙ্কর আতঙ্কের ছবিটা ঘুরে ফিরে আসছে তাদের সবার মনে। আর যারা চোখের সামনে দেখেছিলেন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা কী ভয়ানক চেহারা নিতে পারে, তাদের আতঙ্ক আরও বেশি।
আনন্দবাজার জানায়, যে দিন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তরফে ধর্ম সংসদ-এর ঘোষণা করা হয়েছিল, সে দিনই সিদ্ধান্তটা নিয়ে ফেলেছিলেন তারা। সেই সিদ্ধান্ত মতোই ধর্ম সংসদ-এর আগেই আযোধ্যা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন সেখানকার মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন। নিজেরা যেতে না পারলেও, অন্তত ছোটদের নিরাপদ আশ্রয় পাঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের এক সদস্য জাফারয়াব জিলানির বলেন, ‘ভিএইচপি-এর ধর্ম সংসদ নিয়ে রীতিমতো আতঙ্কে ভুগছেন মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা। সে জন্যই মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন তাদের পরিবারের ছোটদের এবং বয়স্কদের অন্যত্র নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠিয়ে দিচ্ছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘গোটা পরিস্থিতির দিকে আমরা নজর রাখছি। কোর্টের রায়ের পাশাপাশি আজ কী ঘটে সে দিকে নজর রাখছি আমরা। আতঙ্কের জন্য আযোধ্যা ছেড়ে অনেকে ছেড়ে লক্ষ্ণৌ চলে যাচ্ছেন।’ তার অভিযোগ, ‘২০১৯-এ লোকসভা ভোটকে সামনে রেখেই এই সভার আয়োজন করছে ভিএইচপি।’
রবিবার অযোধ্যায় ‘ধর্ম সংসদ’-এর আয়োজন করেছে দাবি বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। তাদের দাবি, ‘পহলে মন্দির, ফির সরকার’। হাজার হাজার সাধুসন্ত এই সংসদে যোগ দেবেন বলে দাবি ভিএইচপির। তাদের আরও দাবি, ‘৯২-এর পর এত বড় মাপের ধর্ম সংসদ আর হয়নি অযোধ্যায়।
এই কর্মসূচি নিয়ে বেশ কয়েক দিন ধরেই চরম উত্তেজনা অযোধ্যায়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অযোধ্যায় মোতায়েন করা হয়েছে ৪২ কোম্পানি প্রভিন্সিয়াল আর্মড কনস্ট্যাবুলারি (পিএসি), ৫ কোম্পানি র্যাসপিড অ্যাকশন ফোর্স (র্যা ফ), ৭০০ কনস্টেবল ও ১৬০ জন পুলিশ পরিদর্শক। সঙ্গে মোতায়েন করা হয়েছে অ্যান্টি-টেররিজম স্কোয়াড(এটিএস)-এর কমান্ডো বাহিনী। নজরদারির জন্য রাখা হয়েছে প্রচুর ড্রোন ক্যামেরাও।
সৌজন্যে- আনন্দবাজার পত্রিকা