দক্ষিণ কোরিয়ায় পিএইচডিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী এনামুল হক মনি বাংলাদেশে নিখোঁজ হয়েছেন। গত বুধবার রাত ১টা ৪৫ মিনিটে ক্যাথে প্যাসিফিক ফ্লাইটে দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার কথা ছিল তার। এয়ারপোর্টের প্রবেশের পূর্ব মুহুর্তে কে বা কারা এনামুল হক মনিকে তুলে নিয়ে যায়।
এনামুল হক মনির ভাই কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর ডঃ মাহমদুল আলম জানান, এনামুল হক সর্বশেষ মোবাইলে ১০টা ৩৪ মিনিটে কোরিয়ার একই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়রনত একজন বন্ধুর সাথে কথা বলেন। সেসময় এনামুল কিছুক্ষণের মধ্যে এয়ারপোর্টে প্রবেশ করবে বলে জানায় এবং এরপর ১১টার দিকে তার স্ত্রী ফোন দিয়ে তাকে পায়নি। তখন এনামুল বন্ধুর বাসা থেকে রিকশায় এয়ারপোর্টে যাচ্ছিলেন।
গতকাল সারাদিন কোন সংবাদ না পাওয়ার পর রাত ১২টার পরে একটা মোবাইল থেকে এনামুলের বড় ভাইকে ফোন দিয়ে দেড় লাখ দিতে বলে। আজ সকালে এনামুলের মোবাইল থেকে এনামুলকে নিয়ে যাওয়া ব্যক্তিরা তার স্ত্রীকে ফোন দেয় টাকা দেওয়ার জন্য। পরিবারের পক্ষ থেকে ডাচ বাংলা ব্যাংকে ৮০ হাজার টাকা এবং বিকাশে ২০ হাজার টাকা মোট এক লাখ টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপর আগের দিনে যোগাযোগ করা মোবাইল এবং এনামুলের মোবাইল দুইটাই অফ পাওয়া যাচ্ছে।
ঘটনার পর শুক্রবার (২৩ নভেম্বর) দক্ষিণখান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে তার পরিবার। দুই দিনেও স্বামীর খোঁজ না পাওয়ায় দুচিন্তায় দিন পার করছে অপহৃতের স্ত্রী। মনির স্ত্রী এবং তার পরিবারের সদস্যরা আইন শৃংখলা বাহিনীর সাথে সবসময় যোগাযোগ করছেন। র্যাব উদ্ধারের জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন এনামুলের ভাই।
এনামুল হক মনি পাবনা সদর থানার রাধানগরের অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা আলহাজ্ব ফজলুল হকের ছেলে। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে মনি সবার ছোট। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে দক্ষিণ কোরিয়ার খিয়ংপুক ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি করছিলেন। ইতিমধ্যে এনামুলের বন্ধুদের মাধ্যমে ফেসবুকে নিখোঁজ হওয়ার সংবাদটি ছড়িয়ে পড়েছে।
এনামুল হকের স্ত্রী নাজমিন সুলতানা নিপা বলেন, কোরিয়ায় তার পিএইচডি সম্প্রতি শেষ হয়েছে। সামনে সমাবর্তন ছিল। তাদের দুই বছরের একটি ছেলে সন্তান আছে। সে দ্রুত তার স্বামীকে ফিরে পেতে চায়।
রাজধানীর দক্ষিণখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তপন চন্দ্র সাহা বলেন, এ ব্যাপারে থানায় একটা ডায়েরি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উদ্ধর্তন কর্মকর্তারা অবগত আছে। পুলিশ প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাঠে কাজ করছে।