Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

islamহিজরি সনের সফর মাসের শেষ বুধবারকে ‘আখেরি চাহর সোম্বা’ বলা হয়। সে হিসেবে আজ সফর মাসের শেষ বুধবার দেশব্যাপী ‘আখেরি চাহর সোম্বা পালিত হচ্ছে। এ উপলক্ষ্যে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে।

৬৩২ হিজরি বর্ষের সফর মাসের শেষ বুধবার মোতাবেক ২৭ সফর প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কঠিন অসুস্থতা থেকে সুস্থতা লাভ করেছিলেন। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুস্থতা লাভের দিন হিসেবে মুসলিম উম্মাহর কাছে এ দিনটি বিশেষভাবে স্মরণীয়।

chardike-ad

আখেরি চাহর সোম্বা কী?: সফর মাসের শেষ বুধবারকে আখেরি চাহর সোম্বা বলা হয়। মুসলিম উম্মাহ এ দিনটিকে খুশির দিন হিসেবে উদযাপন করে। কিন্তু অনেকেই জানে না যে, আখেরি চাহর সোম্বা কী? আখেরি চাহর সোম্বা সম্পর্কে ইসলামের দিক-নির্দেশনাই বা কী?

আখেরি চাহর সোম্বা হলো- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সফর মাসে গুরুতর অসুস্থ হয়ে যান। সফর মাসের শেষ বুধবার তিনি অনেকটাই সুস্থতা লাভ করেন। এ খুশিতে অনেক সাহাবি বিভিন্নভাবে দান-সাদকা করেছেন। এ দান-সাদকা নিঃসন্দেহে উত্তম কাজ।

পরবর্তীতে সাহাবায়ে কেরাম এ দিনটি খুশির দিন হিসেবে উদযাপন করেছেন বা প্রতি বছর এ দিনে দান-সাদকা করেছেন এ সম্পর্কে কোনো হাদিসের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

যেহেতু সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ী ও তাবে-তাবেয়ীদের যুগে আনুষ্ঠানিক কোনো উদযাপন ছিল না, তাই আখেরি চাহর সোম্বা নিয়ে ‘রুসুম-রেওয়াজ বা ঘটা করে তা পালনে বিশেষ কোনো ফজিলত বা যৌক্তিকতা নেই।

সফর মাস সম্পর্কে হাদিসের একটি বর্ণনা পাওয়া যায়। কেউ এটিকে জাল বলেছেন। আবার কেউ কেউ এটিকে সহিহ হাদিস বলেছেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমাকে সফর মাস শেষ হওয়ার সুসংবাদ দেবে, আমি তাকে জান্নাতের সুসংবাদ দেব।’

উল্লেখিত হাদিসটি সম্পর্কে ইসলামি চিন্তাবিদদের দু’টি মতামত পাওয়া যায়। আর তাহলো-

প্রথম মত: হাদিস বিশারদের মতে, এটি সম্পূর্ণ জাল, মিথ্যা। যা আসলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিস নয়, রবং যারা এ হাদিসটি বর্ণনা করেছেন তাদের কেউই হাদিস সংরক্ষণকারীদের অন্তর্ভূক্ত নয়।

দ্বিতীয় মত: হাদিসটি সহিহ, তবে এ হাদিসের পেছনে প্রেক্ষাপট কী তা জানতে হবে। মূলত হাদিসটি একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামে এ সংবাদ দেয়ার কথা বলেছেন। ঘটনাটি হলো-

একবার হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু ইসলামের দাওয়াত নিয়ে দূরের এক জনপদে যান। সেখান দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হয়। তাঁর কোনো খবর না পাওয়ায় প্রিয়নবি চিন্তিত হয়ে পড়েন।

হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু কাছ থেকে একদিন একটি চিঠি এলো, তাতে লেখা ছিল- ‘হে আল্লাহর রাসুল! সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আমি সফর মাস শেষে মদিনায় ফিরব। কিন্তু তখনো সফর মাস অনেক দূরে।

সে সময়টিতে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহুর ফিরে আসার অপেক্ষায় থাকাকালীন সময়ে দ্রুত সফর মাস শেষ হওয়ার কথাগুলো বলেছিলেন। আর এ হাদিসটি সে সময়ের।

তবে… প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিয়মিত আমল ছিল প্রত্যেক আরবি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে নফল রোজা রাখা। যাকে আইয়ামে বিজের রোজা বলা হয়ে থাকে।

সুতরাং আইয়ামে বিজের রোজা রাখলে অনেক সওয়াব পাওয়া যায়। সুতরাং বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিয়মিত আমল আইয়ামে বিজের রোজা রাখা অনেক সাওয়াবের কাজ এবং গুরুত্বপূর্ণ আমল।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সুন্নাতের নেক আমলগুলো যথাযথ পালন করার তাওফিক দান করুন। কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক জীবন-যাপন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।