Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

kuwaitকুয়েতে তিন দেশ থেকে যাওয়া প্রায় ৩ হাজার প্রবাসীকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে বড় একটি অংশ আছে বাংলাদেশি। আর বাকি দুটি দেশ হচ্ছে পাকিস্তান ও মিশর।

সরকারের এ নির্দেশনাকে বিগত কয়েক বছরে কুয়েতের ইতিহাসে মানবপাচারের সঙ্গে অন্যতম ‘সিরিয়াস কেস’ বলে মনে করা হচ্ছে। দেশটির অভ্যন্তরীণ একটি মন্ত্রণালয় বলছে, যে ২ হাজার ৯০০ জনকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে তারা সবাই অবৈধ উপায়ে কিংবা পাচার হয়ে কুয়েতে প্রবেশ করেছেন।

chardike-ad

তিনটি ভুয়া কোম্পানির মাধ্যমে এই প্রবাসীরা কুয়েতে প্রবেশ করে; যাদের কোনও চাকরি ঠিক করেই ছেড়ে দেয়া হয়েছে। কোম্পানিগুলো আটকাদেশ পাওয়া কর্মীদের কাছ থেকে ভিসা প্রতি দেড় থেকে ৩ হাজার কুয়েতি দিনার নিয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৪ লাখ থেকে সাড়ে ৮ লাখ টাকা পর্যন্ত।

আল-আনবা দৈনিকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত কয়েকদিনে মন্ত্রণালয় প্রায় এমন ৯০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে; যাদেরকে ভুয়া কোম্পানির মাধ্যমে কুয়েতে আনা হয়েছে। কুয়েতে কাজ পেতে কোম্পানিগুলো কর্মীদের কাজ থেকে বড় অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, মানব পাচার বিষয়ক প্রসিকিউটর অব ক্রাইমস ওই তিন প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারকে তলব করে। পরে তাদের জামিনে মুক্তি দেয়া হয়।
তবে মানব পাচারের এমন জাল বিস্তারের পেছনে এক সিরিয়ানকে মূলহোতা বলে মনে করা হচ্ছে। এই ব্যক্তিই তিনটি ভুয়া প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিশাল সংখ্যক শ্রমিক এনেছেন কুয়েতে। আর তাদের কোনো কাজ না দিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন।

অবশ্য প্রতিবেদনে তার নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। সূত্রগুলো জানিয়েছে, ডিরেক্টরেট জেনারেল অব রেসিডেন্স অ্যাফেয়ার্স সম্প্রতি হঠাৎ জিব আল-শুইয়ুখ পরিদর্শন করেন। ওই সময় কয়েকজন কর্মীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা এ ধরনের ঘটনার কথা জানান।

ওই কর্মীরা অভিযোগ করেন, তাদের ভাগ্যে কোনও চাকরিই জোটেনি। চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কুয়েতে আনা হয়েছে। এজন্য তারা ভিসা ব্যবসায়ীয়ের প্রচুর টাকা দিয়েছে।

আরও চমক হাজির হয়, যখন ডিরেক্টরেট জেনারেল অব রেসিডেন্স অ্যাফেয়ার্স বিষয়টি নিয়ে আরও ঘাঁটাঘাঁটি শুরু করেন। দেখা যায়, ওই তিনটি কম্পানি একই উপায়ে তিন হাজারের বেশি সংখ্যক মানুষকে এনেছেন চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে। পরে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেন। ক্রমেই কুয়েতে মানব পাচারের এক ভয়াল ও মর্মান্তিক চিত্র উঠে আসে।

ওই সূত্র আরও জানায়, এই দুই হাজার ৯০০ প্রবাসীদের কাছ থেকে ১৫০০ থেকে ৩ হাজার কুয়েতি দিনার নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে পাকিস্তানিদের থেকে প্রতি ভিসায় ৩ হাজার কুয়েতি দিনার নেয়া হয়েছে।

এখন পাবলিক প্রসিকিউশন বলছে, এই অবৈধ ভিসা ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হবে। এ কারণে ভিসা ব্যবসায়ীদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

জানা গেছে, এমন খবর প্রকাশিত হওয়ার পর কুয়েতে সক্রিয় বাংলাদেশি আদম পাচারকারীরাও গা-ঢাকা দিয়েছেন। এমনকি তাদের চ্যালাদেরও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।