এক আসর পর দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্ব ফিরিয়ে আনলো বাংলাদেশের কিশোররা। শনিবার নেপালের কাঠমান্ডুতে সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে বাংলাদেশ টাইব্রেকারে ৩-২ গোলে হারিয়েছে পাকিস্তানকে। নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ গোলে অমীমাংসিত থাকলে ফাইনালের ভাগ্য নির্ধারণ হয় টাইব্রেকারে।
সেমিফাইনালে ভারতকেও টাইব্রেকারে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। ওই ম্যাচের নায়ক গোলরক্ষক মেহেদী হাসান ফাইনালেও ছিলেন সুপার হিরো। তিনি টাইব্রেকারে পাকিস্তানের তিনটি শট ঠেকিয়ে হয়ে যান ম্যাচসেরা পারফরমার।
অথচ টাইব্রেকার পর্বের শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। রাজন হাওলাদারের নেয়া প্রথম শট ক্রববারের উপর দিয়ে গেলে হতাশা নেমে আসে বাংলাদেশ শিবিরে। কিন্তু পাকিস্তানের জুনায়েদের নেয়া প্রথম শট বাম দিকে ঝাপিয়ে ঠেকিয়ে বাংলাদেশকে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফিরিয়ে আনেন গোলরক্ষক মেহেদী হাসান।
দ্বিতীয় শটে হৃদয় গোল করলে বাংলাদেশ এগিয়ে যায় ১-০ গোলে। পাকিস্তানের আদনানের নেয়া দ্বিতীয় শট ডান দিকে ঝাপিয়ে রুখে দেন গোলরক্ষক মেহেদী। মোদসসর নজরের নেয়া পাকিস্তানের পঞ্চম শট ঠেকিয়ে দিয়ে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন মেহেদী হাসান।
তার আগে বাংলাদেশের রবিউল নিজেদের পঞ্চম শট পাকিস্তানের গোলরক্ষকের হাতে তুলে দিয়ে চাপে ফেলেছিলেন দলকে। টাইব্রেকারে বাংলাদেশের ৩ গোল করেছেন হৃদয়, রাজা আনসারী ও রুস্তম। পাকিস্তানের গোল করেছেন মহিবুল্লাহ ও ওয়াসিফ।
নির্ধারিত সময়ের ২৫ মিনিটে পাকিস্তানের আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। কর্নারের বল সেভ করতে গিয়ে পাকিস্তানের ডিফেন্ডার হাসিব হেড নিলে বল চলে যায় জালে।
৫৪ মিনিটে পেনাল্টি গোলে ম্যাচে ফেরে পাকিস্তান। পাকিস্তানের এক ফরোয়ার্ড বল নিয়ে বক্সে ঢুকলে ফেলে দেন বাংলাদেশের হেলাল। রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজালে গোল করেন পাকিস্তানের মহিবুল্লাহ।
দক্ষিণ এশিয়ার কিশোরদের লড়াইয়ে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় শিরোপা। লাল-সবুজ জার্সিধারীরা শিরোপা জয়ে ছুঁয়ে ফেললো ভারতকে। তারাও এ টুর্নামেন্টে দুইবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
এর আগে ২০১৫ সালে সিলেটে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে। সেবারও বাংলাদেশ ফাইনাল জিতেছিল টাইব্রেকারে। ফলাফল ছিল নির্ধারিত সময়ে ১-১ এবং টাইব্রেকারে ৩-২।
এবারের আসরে ফাইনালসহ চার ম্যাচে অপরাজিত বাংলাদেশ দল। প্রথম ম্যাচে মালদ্বীপকে ৯-০ গোলে হারিয়ে চমক দেখায় বাংলাদেশ। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ১০জনকে নিয়ে নেপালকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ।
এরপর সেমিফাইনালে ভারতকে টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে বাংলাদেশ। ফাইনালসহ বাংলাদেশ গোল করেছে ১৩টি, খেয়েছে ৩টি।