দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে এই ভারত ভাগ হয়েছে৷ কিন্তু তারপরও খণ্ডিত হিন্দুস্তানে মুসলিমদের থেকে যেতে দেওয়া হয়েছিল ওরা তেমনই থাকুক৷ শিক্ষা, জীবিকা, ধর্মাচরণের সুযোগও পাক কিন্তু বাদ যাক ভোটাধিকার৷ এমনই প্রশ্ন তোলা হয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মুখপত্র ‘বিশ্ব হিন্দু বার্তায়৷’
বাংলা বিশ্ব হিন্দু বার্তার( ৪৪তম বর্ষ, কার্তিক ১৪২৫, তৃতীয় সংখ্যা) ১৯-২২ নং পৃষ্ঠায় নৃসিংহ প্রসাদ দে-র লেখা ‘হিন্দু সমাজ ভাবনা’র একটি অংশে মুসলিমদের ভোটাধিকার বাদ যাওয়ার জন্য জোরে সওয়াল করা হয়েছে৷
‘হিন্দু সমাজ ভাবনা’ শীর্ষক প্রবন্ধটিতে লেখক লিখেছেন, ‘‘হিন্দুস্থান হিন্দুদের তাই অন্যদের ভোটাধিকার এখনই বন্ধ করা উচিৎ৷ ১৯৪৭ সাল থেকেই এটি করা উচিৎ করা ছিল৷রাষ্ট্র পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের সকল সুযোগ শুধুমাত্র হিন্দুদেরই থাকা উচিৎ৷ মুসলমানদের প্রতি কোনরকম বিরোধ নেই৷ তারা আমাদেরই পূর্বপুরুষের জ্ঞাতি ও আত্মীয়৷ তারা একমাত্র হিন্দুত্বে ফিরে আসলেই পাক ভোটাধিকার৷’’
যদিও এই মতের সঙ্গে একেবারেই সহমত হননি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বাংলা সহ পূর্বাঞ্চলের প্রধান শচীন্দ্রনাথ সিংহ৷ তিনি বলেন, ‘‘দেখুন এটি যেই লিখে থাকুক অবশ্যই ভুল৷ মুসলিমরা দেশের অংশ৷ সাংবিধানিকভাবে ওদের ভোটাধিকার স্বীকৃত৷ অবশ্যই তা সুরক্ষিত থাক৷ যারা অনুপ্রবেশকারী তাদের ভোটাধিকার রোধ করা হোক৷যারা দেশ ভাগের আগের থেকে এদেশে আছেন তাদের নয়৷’’
শচীন্দ্রনাথ এই কথা বলার পরও যে প্রশ্ন থাক৷ যদি তিনি বা বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এই মতের সমর্থক নন তাহলে এরকম একটি লেখা তাদের মুখপত্র, ‘‘বিশ্ব হিন্দু’’ বার্তায় এই রকম একটি লেখা স্থান পেলে কিভাবে? কিংবা এ নিয়ে ভুল সংশোধন কিংবা ক্ষমা চেয়ে কোনও বিবৃতি দেওয়া হবে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পক্ষ থেকে? এই বিষয়ে কিন্তু কোন কথা বলেননি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পূর্বাঞ্চলের প্রধান৷
তবে বিশষেজ্ঞদের মতে এরকম লেখালেখি করে খবরে থাকতে চাইছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ৷ এটা ওদের ভুল নাকি ইচ্ছাকৃত ভুল তা অবশ্যই দেখা উচিৎ৷ ভারতের সংবিধান বিরোধী এই সব কথাবার্থা কোনপক্ষেরই বলা উচিৎ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা৷