সড়ক নিরাপত্তা এবং যানজট সমস্যার আধুনিক প্রযুক্তিগত সমাধান নিশ্চিত করার জন্য সবচেয়ে কম বয়সে পশ্চিম অস্ট্র্রেলিয়ার ইতিহাসে ম্যানেজার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন চট্টগ্রামের কাপাসগোলায় বেড়ে ওঠা মনোজ বড়ুয়া। মনোজের নেতৃত্বে একটি দল প্রতি বছর এসব কাজের জন্য ৯০ থেকে ১০০ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করে থাকে। এ ছাড়া মনোজের দল নতুন যে কোনো উন্নয়ন প্রকল্প সংলগ্ন রোড নেটওয়ার্কের ধারণক্ষমতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং সে অনুসারে প্রকল্পের অনুমোদন দেয়।
দিলীপ বড়ুয়া ও ডেইজি বড়ুয়ার সন্তান মনোজ পড়াশোনা করেছেন চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম কলেজ এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। কাজের প্রতি তার আগ্রহ, দক্ষতা এবং আন্তরিকতার কারণে মনোজের অর্জনের ঝুলিটাও যথেষ্ট ভারী। ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার স্বল্পসংখ্যক রোড সেফটি অডিটরদের একজন হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন মনোজ। এছাড়া ট্রান্সপোর্ট পল্গ্যানিং, ট্রাফিক সিগন্যাল প্ল্যান ও দুর্ঘটনা বিশ্নেষণ এবং সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক অসংখ্য পেশাদারি সার্টিফিকেট অর্জন করেছেন। ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় ট্রান্সপোর্ট অ্যান্ড ট্রাফিক বিভাগের কোঅর্ডিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মনোজ। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার চারটি সড়ক নিরাপত্তা পুরস্কারের মধ্যে তিনটি পুরস্কার এবং ২০১৬ সালের ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া ট্রাভেলস্মার্ট চ্যাম্পিয়ন অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন তিনি।
মনোজের মতে, ‘ছোটবেলা থেকেই আমি খুব আত্মবিশ্বাসী এবং প্রত্যয়ী ছিলাম। আমি বিশ্বাস করি, পৃথিবীতে এমন কোনো কাজ নেই যে কাজে নিয়মানুবর্তিতা ও অধ্যবসায়ের সঙ্গে চেষ্টা করলে সফলতা অর্জন করা যায় না। সর্বোপরি আমার আত্মবিশ্বাস, পরিশ্রম এবং ভালো করার অদম্য ইচ্ছাই আমাকে এই অবস্থানে আসতে সাহায্য করেছে।’
দেশের ও চট্টগ্রামের জন্য কী করতে চান বা পারেন? এই প্রশ্নের জবাবে মনোজ বলেন, ‘বাংলাদেশে রাস্তার ধারণক্ষমতার চেয়ে যানবাহনের সংখ্যা অনেক বেশি। আমার অটোমেটিক ট্রাফিক সিগন্যাল ও যানজট ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা এক্ষেত্রে বেশ কাজে লাগতে পারে। এছাড়া বাংলাদেশে প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ও নিহত হন; সড়ক নিরাপত্তার ওপর আমার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আমাদের সড়ককে নিরাপদ করে তোলা যেতে পারে’।
মনোজ স্বপ্ন দেখেন চট্টগ্রাম হবে বিশ্বের নামকরা দূষণমুক্ত ও নিরাপদ স্মার্ট সিটি যেখানে মানুষের দৈনন্দিন ভ্রমণ অভিজ্ঞতা হবে আনন্দজনক ও উপভোগ্য। যেখানে সড়ক দুর্ঘটনায় একটিও প্রাণ যাবে না।