Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

operationচিকিৎসা বিজ্ঞানে অনন্য নজির স্থাপন করল কলকাতার দুটি হাসপাতাল। মৃত ব্যক্তির হৃদযন্ত্র, লিভার ও কিডনি নিয়ে চারজনের দেহে প্রতিস্থাপন করে দেখালেন তারা। ২৫ অক্টোবর রাত ১০টায় কলকাতা শহরের অ্যাপোলো ও এসএসকেএম হাসপাতালে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের এ ঘটনা ঘটে।

ভারতীয় চিকিৎসকদের মতে, এটা একটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এমন অস্ত্রপচারের ঘটনায় অ্যাপোলো হাসপাতালের ভাইস প্রেসিডেন্ট জয় বসু বলেন, আমাদের কাছে আজ খুব গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই ঘটনার পর অঙ্গদান সম্পর্কে মানুষের সচেতনতা বাড়বে বলে আশা করছি আমরা।

chardike-ad

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকাল ৬টায় ব্রেন ডেথ হয় অমিত মুখপাধ্যায় নামের এক যুবকের। তারপরই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিহতের বাবা পাঁচু মুখপাধ্যায়কে জানান, তিনি চাইলে তার ছেলের তিনটি অঙ্গ তিনজন মানুষের প্রাণ ফিরিয়ে দিতে পারে। উত্তরে পাঁচু মুখার্জি জানান, ছেলেকে তো আর ফিরে পাবো না। ছেলের দ্বারা অন্যের প্রাণ বাঁচুক এটাই হয়ত বিধাতা চেয়েছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অঙ্গ প্রতিস্থাপনের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান অমিতের বাবা।

ওই দিনই সকাল ৯টার মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করে আনুষ্ঠানিকতা সারেন মৃত অমিতের বাবা। লিখিতভাবে ছেলের তিনটি অঙ্গ দান করেন তিনি।

২৫ তারিখ রাতে অ্যাপোলো হাসপাতালে অমিতের হৃদযন্ত্র নিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয় এক রোগীর দেহে। একই হাসপাতলে একই সময়ে তার লিভার নিয়ে প্রতিস্থাপিত অন্য রোগীর দেহে।

এদিকে অমিতের কিডনি পৌঁছে যায় কলকাতার সরকারি হাসপাতাল এসএসকেএম-এ। সেখানেও রাতেই প্রায় একইসময়ে কিডনি প্রতিস্থাপনের অপারেশন করা হয়।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম জি নিউজের খবর, অমিত মুখোপাধ্যায়ের হৃদযন্ত্রটি বসানো হয়েছে অনিমা নস্করের দেহে। লিভারটি প্রতিস্থাপিত হয়েছে মনোজ কুমার হেলা নামে এক ব্যক্তির দেহে।

এদিকে এসএসকেএম হাসপাতালে যাদবপুরের বাসিন্দা সৈকত সাধুখাঁর (১৬) দেহে একটি কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অন্য কিডনিটি সনতলাল যাদব (৬০) নামে হলদিয়ার এক ব্যক্তির দেহে প্রতিস্থাপনের জন্য অস্ত্রপচার চলছে।

ইতোমধ্যে অস্ত্রপচারে সফল সৈকত সাধুখাঁর পরিবার জানায়, গত দেড় বছর ধরে সৈকতের জন্য কিডনির খুঁজছি আমরা। যিনি কিডনি দিয়েছেন তাকে ফিরিয়ে আনা যাবে না তবে তিনি যাদের কিডনি দিয়েছেন তাদের মধ্য বেঁচে থাকবেন।

জানা গেছে, পর্ণশ্রীর শকুন্তলা পার্কের বাসিন্দা অমিত মুখোপাধ্যায় (২৩)। ১৪ অক্টোবর রাতে মোটরবাইকে চড়ে বন্ধুর সঙ্গে ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শহরের উল্টোডাঙ্গার কাছে তার বাইক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। মাথায় গুরুতর আঘাত নিয়ে অমিতকে ভর্তি করা হয় অ্যাপোলো হাসপাতালে। কোমায় চলে যান অমিত।

বৃহস্পতিবার চিকিৎসক অমিতের বাবাকে জানান, ছেলের ব্রেন ডেথ হয়েছে। এর পরেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সূত্র: জি নিউজ