জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা বলছে, বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে শরণার্থী মেয়েদের বিক্রি করে দেয়া হচ্ছে। পরিবারের জন্য অর্থ যোগাড় করতে ক্যাম্পের বাইরে বিভিন্ন গোষ্ঠির হাতে এসব মেয়েদের তুলে দেয়া হয়। পরে বাধ্যতামূলক কাজে নিয়োজিত করা হয় তাদের। রয়টার্স।
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) জানিয়েছে, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর পরবর্তী এক বছরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ৯৯টি মানব পাচারের ঘটনা চিহ্নিত করতে পেরেছে তারা। কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, বাস্তব সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি হবে।
পাচার হওয়াদের মধ্যে ৩৫ জন মেয়ে আর ৩১ জন নারী। মেয়েদের ৩১ জন এবং নারীদের ২৬ জনকে বাধ্যতামূলক শ্রমে নিয়োজিত করা হয়। এদের মধ্যে ৪ মেয়ে ও ৫ নারী যৌন নির্যাতনের শিকার হন।
আইওমের মুখপাত্র দিনা পারমার বলেন, ‘অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায়, গরীব পরিবারগুলোকে ভাল কাজ দেয়ার লোভ দেখানো হয়। অনেকেই এই ফাঁদ সম্পর্কে কিছু না জেনে রাজি হয়ে যান।’
পারমার জানান, অনেক পরিবার ঝুঁকি বুঝেও রাজি হন। একজনের বিনিময়ে পুরো পরিবারকে ভাল রাখতে চান তারা।
মানবপাচার বিষয়ে রোহিঙ্গাদের সচেতন করছে বাংলাদেশি দাতব্য সংগঠন ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশন। সংস্থাটির সদস্য জিশু বড়ুয়া বলেন, ‘পাচারের শিকার হয়েছেন এমন এক হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গাকে চিহ্নিত করেছি আমরা।’
আইওমের বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পের বাইরে যাওয়া বা কাজ করার অনুমতি দেয় না। কিন্তু অভাবের তাড়নায় ক্যাম্পের বাইরে গিয়ে আয় করতে চায় অনেক রোহিঙ্গা। আর এ অবস্থারই সুযোগ নেয় পাচারকারীরা।
চলতি বছরের আগস্টে প্রকাশিত জাতিসংঘের রিপোর্টে বলা হয়, মিয়ানমারে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’র মুখে শরণার্থী হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা ৭ লাখ ছাড়িয়েছে। আর আগে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীরা মিলিয়ে বর্তমানে ৯ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে বসবাস করছে।