সৌদি আরব ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জামাল খাশোগির নিখোঁজ হওয়াকে কেন্দ্র করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি নাকচ করে দিয়েছে এবং এ ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হলে জবাবে কঠোর প্রতিশোধ নেয়ার হুমকি দিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প খাশোগি হত্যার সাথে সৌদি আরব জড়িত থাকলে মারাত্মক পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি জানানোর পর দেশটির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এ হুমকি দেয়া হয়।
এতে বলা হয়, সৌদি আরব অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, রাজনৈতিক চাপ বা অসত্য অভিযোগ পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে যেকোনো হুমকি বা খাটো করার চেষ্টা পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করছে। সৌদি আরব আরো নিশ্চিত করছে যে, যদি তাদের কোনো পদক্ষেপের মাধ্যমে লক্ষ্যবস্তু করা হয়, তাহলে তারা জবাবে আরো বড় ধরনের পদক্ষেপ নেবে। রিয়াদে সপ্তাহের প্রথম দিনে তাদাউল এক্সচেঞ্জে একপর্যায়ে শতকরা প্রায় ৭ ভাগ দরপতনের পর এ বিবৃতি দেয়া হয়।
গত শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, খাশোগির নিখোঁজ হওয়ার পেছনে সৌদি আরবের হাত থাকতে পারে এবং খাশোগিকে খুন করা হয়েছে বলে প্রমাণিত হলে সৌদি আরবকে কঠোর শাস্তি দেয়া হবে বলে তিনি হুঁশিয়ার করে দেন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল সিবিএস-এর ‘সিক্সটি মিনিট’ অনুষ্ঠানে তিনি এ অঙ্গীকার করেন। অনুষ্ঠানটি স্থানীয় সময় রোববার প্রচারিত হওয়ার কথা। ট্রাম্প বলেন, আমরা ঘটনার উপসংহারে যাওয়ার চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, বিষয়টি বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ এ কারণে যে তিনি সাংবাদিক ছিলেন।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা জানি না খশোগিকে হত্যা করা হয়েছে কি না। তবে পরিস্থিতি খুব শক্তভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। যদি প্রমাণ হয় যে সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে সৌদি আরব হত্যা করেছে তাহলে দেশটিকে মারাত্মক পরিণতির মুখে পড়তে হবে। তবে তিনি কোন ধরনের ব্যবস্থার কথা চিন্তা করছেন প্রশ্ন করা হলে ট্রাম্প বলেন, দেশটির কাছে সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি স্থগিতের মানে দাঁড়াবে নিজেই নিজেকে শাস্তি দেয়া।’
ট্রাম্প মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবের কাছে সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি স্থগিত করলে রাশিয়া ও চীন এর সুযোগ নিতে পারে। তাই দেশটিকে শাস্তি দেয়ার ক্ষেত্রে ভিন্ন পথে হাঁটতে চান তিনি। ট্রাম্প বলেন, আমি আপনাদের একটি উদাহরণ দেবো। তারা সামরিক সরঞ্জাম কেনার আদেশ দিয়েছে। বিশ্বের প্রত্যেকেই ওই আদেশ পেতে চাইবে। রাশিয়া তা চায়, চীন চায়, আমরাও চেয়েছি। আমরা সেটি পেয়েছি এবং আমরা তার সবটাই পেয়েছি। তিনি আরো বলেন, আমি কী চাই না তা বলতে পারি। আমি বোয়িং, লকহিড, রেথিয়নের চাকরির ক্ষতি করতে চাই না। আমি এ ধরনের একটি আদেশ হারাতে চাই না।
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান খাশোগিকে খুনের নির্দেশ দিয়েছেন কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেন, এমন তথ্য এখনো কারো কাছে নেই। তবে আমরা হয়তো খুঁজে বের করতে পারব। বাস্তবে এমনটা হয়ে থাকলে আমরা খুব মর্মাহত ও ক্রুদ্ধ হবো। এর আগে বৃহস্পতিবার ট্রাম্প বলেছিলেন, খাশোগির ঘটনায় তিনি সৌদি আরবের সঙ্গে হাজার হাজার কোটি ডলারের অস্ত্রচুক্তি বাতিল করতে চান না। তিনি বলেছিলেন, এটা আমাদের জন্য কী কল্যাণ বয়ে আনবে? এটা তুরস্কে ঘটেছে এবং আমাদের জানা মতে খাশোগি আমেরিকার নাগরিক নন।