বিভিন্ন দেশের অভিবাসীদের দেশে প্রবেশের সুযোগ করে দেয়ার অভিযোগে মালয়েশিয়ায় ৬ জন ইমিগ্রেশন পুলিশকে আটক করেছে দেশটির দুর্নীতি দমন কমিশন। শুক্রবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে কুয়ালালামপুর ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে তাদের আটক করা হয়।
এসব পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা চীন, ভিয়েতনাম, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মায়ানমার, ইন্দোনেশিয়া, নাইজেরিয়া, নেপাল, ইরান ও উজবেকিস্তানের নাগরিকদের দেশে অবৈধভাবে প্রবেশের সুযোগ করে দিয়েছেন। আটকদের বিরুদ্ধে মানব পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
দেশটির উতুসান পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিভিন্ন দেশের অভিবাসীদের পুঁজি করে মালয়েশিয়ায় একটি সিন্ডিকেট গড়ে ওঠে। গ্রুপটি মালয়েশিয়ায় প্রবেশের জন্য প্রত্যেকের কাছ থেকে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিত। সব থেকে বেশি চার্জ নেয়া হত বাংলাদেশিদের কাছ থেকে।
আটক ইমিগ্রেশন বিভাগের ৬ কর্মকর্তার বিলাসবহুল জীবনযাপন ও তাদের কর্মকাণ্ডের কারণে এই সিন্ডিকেট গ্রুপটির সন্ধান পায় দুর্নীতি দমন কমিশন। প্রতি মাসে এই গ্রুপটি সর্বনিম্ন ৬০ লাখ টাকা আয় করতো বলে জানা গেছে।
অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক দাতো সেরি মোস্তফার আলী জানান, আটক ইমিগ্রেশন পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে কালো তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের মালয়েশিয়ায় প্রবেশের অনুমতি এবং অবৈধদের বিনা ডকুমেন্টে বের করে দেয়ার অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। দুর্নীতি বা সততা লঙ্ঘনের দায়ে দোষী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে মালয়েশিয়ায় অবৈধ অভিবাসীদের ক্ষমা প্রার্থনা এবং পুনঃনিবন্ধনের ‘থ্রি প্লাস ওয়ান’ প্রোগ্রাম শেষ হওয়ার পর ‘মেগা থ্রি অপস’ নামে চলছে ধরপাকড়। ধরপাকড়ের ভয়ে আত্মগোপন করেও রেহাই পাচ্ছেন না বিদেশি কর্মীরা। খুঁজে খুঁজে আটক করা হচ্ছে অবৈধ অভিবাসীদের। এমন পরিস্থিতিতে জরিমানা দিয়েও দেশে ফিরতে পারছেন না তারা। এ ছাড়া বৈধ কাগজ থাকা সত্ত্বেও হয়রানির শিকার হচ্ছেন অনেকে।
খোজঁ নিয়ে জানা গেছে, ‘ইমিগ্রেশন বিভাগের ধরপাকড়ের পর থেকে বাংলাদেশি ছাড়াও অন্যান্য বিদেশি শ্রমিকরা আড়ালে চলে গেছেন। শুধু অবৈধরাই নয়; বৈধ অনেক শ্রমিকেই এখন হয়রানির ভয়ে আত্মগোপন করছেন।
এদিকে এ পর্যন্ত কতজন বাংলাদেশিকে আটক করা হয়েছে তা পরিষ্কার নয়। তবে ধারণা করা হচ্ছে, ৭ হাজারেরও অধিক বাংলাদেশিকে আটক করা হয়েছে।
জানা গেছে, ২৫ সেপ্টেম্বর পুত্রজায়ায় মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী কুলা সেগারান এবং বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির মধ্যে যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উঠে আসে অবৈধদের বৈধ করার বিষয়টি।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন অবৈধদের বৈধ করা হবে। এ ছাড়া বৈধ কর্মীদের হয়রানি করা হবে না।