হুইলচেয়ার ছাড়া চলাফেরা করতে পারছেন না অভিনেত্রী কাজী নওশাবা। নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার এ অভিনেত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি ২০৪ নং ওয়ার্ডের ২০ নম্বর বেডে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতাল সূত্র জানায়, পিঠের ব্যথার পাশাপাশি তার শরীরের রক্তচাপ ওঠানামা করছে।
ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে গত ৪ঠা আগস্ট উত্তরা থেকে নওশাবাকে আটক করে র্যাব। তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে প্রথম দফায় ৫ই আগস্ট ৪ দিনের রিমান্ডে নেয় গোয়েন্দা পুলিশ।
গত শুক্রবার তাকে দ্বিতীয় দফায় ২ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। রিমান্ড শেষে সোমবার পুলিশ তাকে আদালতে হাজির করলে নওশাবা অসুস্থ বোধ করলে আদালতের নির্দেশে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। চিকিৎসকদের পরামর্শে ওই দিনই ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার এমআরআই করা হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির উদ্দিন বলেন, মঙ্গলবার সকালে তাকে আমি দেখতে গিয়েছিলাম। ইতিমধ্যে তার একটি এমআরআই করা হয়েছে। অনেক আগে তার কোমরে একটি অপারেশন হয়েছিল। ফলে সেখানে নতুন করে আবার ব্যথা দেখা দিয়েছে। এছাড়া নিচু স্থানে বসলে হয়তো তিনি অস্বস্তি বোধ করেন এবং তার কোমরের ব্যথা বেড়ে যায়। যে অবস্থায় থাকলে তার ব্যথা বাড়ে তা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে তাকে হাসপাতালে রাখা হয়েছে। তিনি পুরো সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত আমরা চিকিৎসা দেবো। নওশাবা জরুরি বিভাগের চিকিৎসক প্রফেসর শফিকুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী কাজী নওশাবা ছাত্রজীবন থেকেই বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজে জড়িত। প্রতিবন্ধী শিশু, রোহিঙ্গা শিশু ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে নিয়ে তিনি কাজ করছেন। মাস কয়েক আগে সাঁওতাল পল্লীতে অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর বাবার কিনে দেয়া খাদ্য ও বস্ত্রসামগ্রী নিয়ে সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। এছাড়া রোহিঙ্গা শিশুদের ত্রাণ কর্মসূচির পাশাপাশি নিয়মিত তাদের খোঁজখবর রাখেন নওশাবা।
দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে নওশাবা সবার ছোট। একমাত্র কন্যা প্রকৃতি ও মিউজিশিয়ান স্বামী আহমেদ এহসানুর রহমান জিয়াকে নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে আদাবরের বাসায় নিচতলার ফ্ল্যাটে থাকেন তিনি। তার ৬ বছর বয়সী কন্যা প্রকৃতি শিশু শ্রেণিতে পড়ে। সোমবার মাকে দেখতে সে হাসপাতালে এসেছিল। এসময় মাকে বাসায় নিয়ে যাওয়ার জন্য উপস্থিত স্বজনদের কাছে আবদার করে।
সৌজন্যেঃ মানবজমিন