থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলের থ্যাম লুয়াং গুহা থেকে উদ্ধার স্থানীয় ফুটবল দল উইল্ড বোরের ১২ সদস্য ও তাদের কোচ অবশেষে হাসপাতাল থেকে ছাড় পেয়েছেন। বাড়িতে যাওয়ার প্রস্তুতি হিসেবে বুধবার তারা হাসপাতাল ত্যাগ করেন।
তিনদিনের শ্বাসরুদ্ধকর উদ্ধার অভিযান শুরু হয় গত ৮ জুলাই। প্রথম দু’দিনে মোট আটজন ও অভিযানের শেষদিন ১০ জুলাই (মঙ্গলবার) কোচসহ অন্য চার কিশোরকে গুহা থেকে বের করে আনা হয়।
গত সপ্তাহে উদ্ধােরের পর থেকে এই কিশোররা ও তাদের কোচ চিয়াং রাই প্রদেশের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বুধবার থাই কিশোররা তাদের শ্বাসরুদ্ধকর গুহায় আটকাবস্থা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রথমবারের মতো কথা বলবেন।
সংবাদ সম্মেলন শেষে তারা পরিবারে ফিরে যাবেন বলে দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। থাই সরকারের প্রধান মুখপাত্র সুনসার্ন কায়েওকুমনার্ড বার্তাসংস্তা এএফপিকে বলেন, সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা কিশোরদের প্রশ্ন করতে পারবেন। তবে বাড়িতে ফিরে যাওয়ার পর স্বাভাবিক জীবন-যাপনের জন্য তাদের সঙ্গে গণমাধ্যম কথা বলতে পারবে না।
চিয়াং রাই প্রদেশের গভর্নর প্রাচন প্রাতসুকান বলেন, এটা হবে তাদের একমাত্র আনুষ্ঠানিক গণমাধ্যম স্বাক্ষাৎকার। এর পরে আর গণমাধ্যমের সঙ্গে তারা কথা বলবে না। স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে থাই কিশোরদের এই সংবাদ সম্মেলন শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
গত ২৩ জুন থেকে গুহায় উইল্ড বোর ফুটবল দলের ১২ কিশোর সদস্য ও তাদের কোচ আটকা ছিলেন। ২ জুলাই ৯ দিনের এক অভিযানের পর দুই ব্রিটিশ ডুবুরি গুহার ভেতরে কিশোর ফুটবল দলের সদস্যদের খুঁজে বের করেন। দীর্ঘ প্রায় ৪ কিলোমিটার সংকীর্ণ ও উঁচু-নিচু জলমগ্ন পথ পাড়ি দিয়ে কিশোরদের উদ্ধারে শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান শুরু হয়।
প্রথম দিকে থাই কর্তৃপক্ষ জানায়, গুহায় বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় ও বর্ষা মৌসুমে বর্ষণের কারণে তাদের এখনই উদ্ধার করা সম্ভব হবে না। আগামী ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারি পর্যন্ত তাদের উদ্ধারের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
কিন্তু ৮ জুলাই নাটকীয়ভাবে বন্যার পানি কিছুটা কমে যাওয়ায় এবং বর্ষণ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর উদ্ধার মিশনের প্রধান ও চিয়াং রাই প্রদেশের গভর্নর ন্যারংস্যাক ওসোত্তানাকর্ন জানান, কিশোরদের উদ্ধারে এখনই উপযুক্ত সময়। ওই দিন প্রথম দফায় চারজন ও পরদিন দ্বিতীয় দফায় চারজনকে উদ্ধার করা হয়। কোচসহ বাকি চারজনকে ১০ জুলাই বের করে আনেন উদ্ধারকারীরা।
চিয়াং রাই প্রদেশের গুহায় আটকা ১২ কিশোর ফুটবলার ও তাদের কোচকে উদ্ধারে ১৩ বিদেশি ডুবুরি ও থাইল্যান্ডের নৌবাহিনীর অভিজাত শাখা থাই নেভি সিলের পাঁচ সদস্য কাজ করেন। এছাড়া গুহার ভেতরে ও প্রবেশ পথে আরো অন্তত ৯০ জন ডুবুরি উদ্ধার তৎপরতায় নিয়োজিত ছিলেন। তবে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে অক্সিজেনের অভাবে থাই নেভি সিলের সাবেক এক সদস্য গুহার ভেতরে মারা যান।