নানা আশা-আশঙ্কার দোলাচলে দুলতে দুলতে সেন্ট পিটার্সবার্গের গ্যালারিতে আসন নেয় দর্শকরা। অদৃশ্যভাবে সবার মাথায় জটিল সমীকরণের ক্যালকুলেটর কাজ করছিল। কিন্তু ১৪ মিনিটে এভার বানেগার লফটেড শট, নিয়ন্ত্রণে নেন মেসি। কয়েক ধাপ এগিয়ে এসে প্রায় বিরল হয়ে পড়া ডান পায়ের ব্যবহার করলেন। বাম পায়ের মতই শক্তিশালী সেই শট। কেঁপে উঠলো সুপার ঈগল নাইজেরিয়ার জাল।
নাটকের নাটকীয়তা তো এত সহজে শেষ হওয়ার নয়। রাশিয়া বিশ্বকাপ যেভাবে একের পর নাটকীয়তা জন্ম দিচ্ছে, তাতে আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়া ম্যাচ বাদ যাবে কেন? ম্যাচের ৫১ মিনিটে পেনাল্টি দিলেন রেফারি। স্পট কিক নিলেন মোসেস। গোল করলেন। তাতে সমতা। আর সমতা মানেই তো আর্জেন্টিনার বিদায়।
চূড়ান্ত নাটকীয়তা তো তখনই শুরু। নাইজেরিয়া ড্র করলেও যেখানে চলে, সেখানে তারা রক্ষণাত্মক হবেই। হলোও। কিন্তু মাঝে মাঝে কাউন্টার অ্যাটাকে নিজের ঢেরা ছেড়ে বেরিয়ে এসে যেভাবে আক্রমণ রচনা করেছিল নাইজেরিয়ানরা, তাতে আর্জেন্টিনা যে আরও দু’একটি গোল হজম করেনি সেটা সৌভাগ্যেরই বটে তাদের।
কিন্তু আর্জেন্টিনা তো আর গোল দিতে পারছে না। পূর্ণ হতাশা ঘিরে ধরে আর্জেন্টাইনদের। ম্যারাডোনা পর্যন্ত বসে বসে কাঁদছিলেন। বেদনায় চক্ষু মুচছিলেন বারবার। শেষ পর্যন্ত আর্জেন্টাইনদের ত্রাতা হয়ে এলেন মার্কোস রোহো। ম্যানইউর এই ডিফেন্ডার ৮৬ মিনিটে ডান উইং থেকে বল পেলেন গ্যাব্রিয়েল মার্কাদোর কাছ থেকে। দারুণ শট নিলেন। জিতে গেলো আর্জেন্টিনা। নিশ্চিত হলো দ্বিতীয় রাউন্ড।
এরপরই হিসাব শুরু, দ্বিতীয় রাউন্ডে কার মুখোমুখি হচ্ছেন লিওনেল মেসিরা। আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল, ডি গ্রুপের রানারআপ দ্বিতীয় রাউন্ডে মুখোমুখি সি গ্রুপের চ্যাম্পিয়নের। সে হিসেবে দ্বিতীয় রাউন্ডেই আর্জেন্টিনা মুখোমুখি হচ্ছে সি গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের। ৩০ জুন, দ্বিতীয় রাউন্ডের প্রথম ম্যাচেই কাজান এরেনায় ফরাসিদের বিপক্ষে মাঠে নামবে আর্জেন্টিনা। বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় শুরু হবে ম্যাচটি।
আর্জেন্টিনা রানারআপ হওয়ায় সুবিধা হয়েছে ক্রোয়েশিয়ার। কারণ, তারা গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে দ্বিতীয় রাউন্ডে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছে ডেনমার্ককে। অপেক্ষাকৃত সহজ তাদের জন্য। ১ জুলাই রাত ১২টায়, নিঝনি নভগোরদ স্টেডিয়ামে ডেনিসদের মুখোমুখি হবে ক্রোয়াটরা।