জয়ের লক্ষ্য নিয়ে ক্রোয়েশিয়ার মুখোমুখি হয়েছিল আইসল্যান্ড। কিন্তু জয় তো দুরে থাক, ড্রও করতে পারেনি বিশ্বকাপে নবাগত দেশটি। উল্টো ২-১ গোলে আইসল্যান্ডকে হারিয়ে ‘ডি’ গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়েই দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠেছে ক্রোয়েশিয়া।
বিশ্বকাপে টানা তিনটি ম্যাচ এর আগে আর কখনও জেতেনি ক্রোয়েশিয়া। ১৯৯৮ সালে সেমিফাইনাল খেললেও গ্রুপ পর্বে তিন ম্যাচ টানা জিততে পারেনি ডেভর সুকারের দল; অথচ এবারই প্রথম তারা টানা তিনটি ম্যাচ জয়ের রেকর্ড গড়লো। তিন জয়ে ক্রোয়েশিয়ার পয়েন্ট ৯। নাইজেরিয়াকে হারিয়ে আর্জেন্টিনার পয়েন্ট ৪। ক্রোয়েশিয়া গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন, আর্জেন্টিনা রানারআপ।
প্রথমার্ধে কোনো গোলই হলো না। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গোল দিয়ে এগিয়ে যায় ক্রোয়েশিয়া। এই ম্যাচে অর্ধেক চলে যাওয়ার পর প্রথম গোল পায় ক্রোয়েশিয়া। গোল করেন মিলান বাদেলজ। লুকা মদ্রিচের কাছ থেকে বল পেয়ে দারুণ এক ভলিতে আইসল্যান্ডের জালে বল জড়ান বাদেলজ।
ম্যাচের ৭৬তম মিনিটে এসে গোল শোধ করে দেয় আইসল্যান্ড। পেনাল্টি থেকে গোলটি করেন জিলফি সিগার্ডসন। আগের ম্যাচেই নাইজেরিয়ার বিপক্ষে পেনাল্টি মিস করেছিলেন এই জিলফি। খেলা শেষ হওয়ার কয়েক মুহূর্ত আগে গোল দিয়ে ক্রোয়েশিয়াকে জয় এনে দেন ইভান পেরিসিচ। বাদেলজের কাছ থেকে বল পেয়ে দুর্দান্ত শটে আইসল্যান্ডের জালে বল জড়ান পেরিসিচ।
অথচ এই ম্যাচে আইসল্যান্ডের বিপক্ষে এই ম্যাচে অনেকটাই দুর্বল শক্তির ছিল ক্রোয়েশিয়া। কারণ, রোস্তভ এরেনায় আজ আগের ম্যাচের নিয়মিত একাদশের ৯জনকেই মাঠে নামাননি কোচ। নিজের সাইড বেঞ্চকে ঝালিয়ে নেয়ার পূর্ণ প্রচেষ্টা এটি। কোনোমতে ড্র করতে পারলেও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। তবুও ভয়-ডরহীন একাদশ বানিয়েছেন ক্রোয়েশিয়া কোচ।
অন্যদিকে পূর্ণ শক্তির আইসল্যান্ড মাঠে নামে। ক্রোয়েশিয়ার জালে বল জড়াতে পারলেই দ্বিতীয় রাউন্ডের দরজা খুলে যাবে তাদের সামনে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গোলের খেলায় গোলই করতে পারলো না আইসরা।
তবুও তারা ক্রমেই আইসল্যান্ডকে চাপের মধ্যে রাখে। ক্রোয়েশিয়ার আক্রমণের মুখে আইসল্যান্ড ডিফেন্ডাররা গোল বাঁচাতেই ব্যাস্ত ছিল বেশি। যদিও গোলের সুযোগ পেয়েছিল আইসল্যান্ডই বেশি। শেষ পর্যন্ত প্রথমার্ধ শেষ হলো গোলশূন্য সমতায়। তবে ম্যাচের তিন গোলের সবগুলোই হয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে। ২-১ গোলেই জিতেছে ক্রোয়াটরা।
তবে প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে দারুণ এক গোলের সুযোগ তৈরি করেছিলেন আইসল্যান্ড অধিনায়ক গানারসন। কিন্তু ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক কালিনিচ অসাধারণ দক্ষতায় ঝাঁপিয়ে পড়ে সেটি রক্ষা করেন। তার আগে ৪০ মিনিটে একটি সুযোগ পেয়েছিল আইসল্যান্ড। ফিনবগাসন ৩০ গজ দুর থেকে দুর্দান্ত এক শট নেন। কিন্তু সাইড বারের পাশ দিয়ে চলে যায় বলটি।
খেলায় বলের দখল ক্রোয়েশিয়ার কাছে ৬১ ভাগ এবং আইসল্যান্ডের কাছে ৩৯ ভাগ থাকলেও গোল লক্ষ্যে আইসল্যান্ড শট নিয়েছে ১৪টি। অন্যদিকে ক্রোয়েশিয়া নিয়েছে মাত্র ১০টি। এর মধ্যে অন টার্গেট দুটি এবং ওই দুটিই গোল।