বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে যাওয়া প্রবাসীদের জন্য ভিসা নবায়ন সহজ করছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। ভিসা নবায়নে এখন আর আগের মতো দেশ ছাড়তে হবে না প্রবাসীদের। ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তা বাড়াতে বা নবায়ন করতে আগে একজন প্রবাসীকে নিজ দেশে ফেরত যেতে হতো। এরপর আবার আমিরাতে পুনরায়- প্রবেশ করতে হতো।
সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাতের মন্ত্রিসভায় এ সংক্রান্ত সংস্কারনীতির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ওই সংস্কারে প্রবাসীদের সুবিধার জন্য অন্তত ৮টি কৌশলগত পরিবর্তন আনা হয়েছে।
এই ব্যবস্থায় প্রবাসী শ্রমিকদের ইন্সুরেন্সেও পরিবর্তন আনা হচ্ছে। আগে জনপ্রতি শ্রমিকের জন্য যেখানে ইন্সুরেন্স হিসেবে ৩ হাজার আমিরাতি দিরহাম জমা রাখতো হতো, এখন তা বিলুপ্ত করা হয়েছে। নতুন সিস্টেমে ইন্সুরেন্স বাবদ বছরে ব্যয় হবে জনপ্রতি মাত্র ৬০ দিরহাম। আমিরাতের বিশ্লেষকরা বলছেন, এ সিস্টেমে নিম্ন আয়ের প্রবাসীরাও ইন্সুরেন্স সুবিধার আওতায় আসবেন।
ইন্সুরেন্সে জমা হওয়া অর্থ দেশে ফেরার সময় প্রবাসীদের ছুটি ভাতা, ওভারটাইম ভাতা, বকেয়া বেতন, বিমানের রিটার্ন ভাড়া এমনকি কাজ করার সময় আহত হলে তার ব্যয়ও বহন করা হবে। প্রবাসী প্রতি যার পরিমাণ হবে ২০ হাজার দিনার পর্যন্ত।
দেশটির মিডিয়া অফিস বলছে, চলতি বছরের অক্টোবর থেকে চাকরিপ্রার্থীরা ৬ মাস মেয়াদী ভিসার সুবিধা পাবেন; যাদেরকে ভিসার মেয়াদ বাড়াতে দেশত্যাগ করে পুনরায় ঢুকতে হবে না। তবে এতে কী পরিমাণ ফি আরোপ করা হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি, বলা হচ্ছে সেটা সবার জন্য ব্যয়যোগ্য হবে।
নতুন আইনের আওতায় অবৈধরা চাইলে নিজ খরচে দেশে চলে যেতে পারবেন। এজন্য তাদের ওপর দুই বছর আগে আমিরাতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকবে না। তাদের ওপর কোনও শাস্তিও আরোপ করা হবে না।
গত মাসে ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের জন্য শতভাগ মালিকানাধীন বিদেশি কোম্পানি, বিনিয়োগকারী, বিজ্ঞানী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, উদ্যোক্তাদের জন্যও ১০ বছরের ভিসা প্রদান করছে আমিরাত।
কিন্তু হঠাৎ কেন এই সংস্কার?: ব্লুমবার্গের তথ্য মতে, ২০১৪ সালের পর তেলবাজারে চরম ধরা খায় আমিরাত। প্রায় ২ বছরে পণ্যটির দর ৭০ শতাংশ নামার পর অর্থনীতি অনেকটাই চুপসে যায়। এখন সেখান থেকে দেশটি ঘুরে দাঁড়ানোর পথে নেমেছে। আর তার জন্যই এই সংস্কার আনা হচ্ছে। এর মাধ্যমে আকৃষ্ট করা হবে বিদেশি বিনিয়োগকেও।