বাগেরহাটের শরণখোলার রাজৈর এলাকায় দুবাই প্রবাসী একটি পরিবারকে মারধর করে কাঁটাতারের ঘেরা দিয়ে অবরুদ্ধ করে রেখেছে ছাত্রলীগ নেতা আসাদুজ্জামান আসাদ ও খোন্তাকাটা ইউপি সদস্য আ. রহিম হাওলাদার। পাঁচদিন ধরে অবরুদ্ধ পরিবারটি ঘর থেকে রেব হতে পারছেনা। যেনো তারা কারো সাথে যোগাযোগ করতে না পারে সে জন্য মোবাইল ফোনটিও ভেঙে ফেলা হয়েছে। পরবর্তী হামলার আশঙ্কায় দুটি শিশু সন্তান নিয়ে পরিবারটি বর্তমানে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে এবং ঘর থেকে বের হতে না পারায় অবরুদ্ধ অবস্থায় মানবেতর জীবযাপন করছে।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা জানায়, ৩ জুন শরণখোলা ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামান আসাদ ও ইউপি সদস্য মো. আব্দুর রহিম উপজেলার খোন্তাকাটা ইউনিয়নের রাজৈর এলাকার দুবাই প্রবাসী মো. খলিলুর রহমান তালুকদারের বাড়িতে লোকজন নিয়ে হামলা চালায়। খলিলের বাড়ির মধ্যে তাদের জমি রয়েছে দাবি করে পুরো বাড়িঘর কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে ফেলে তারা।
ঘটনাটি গৃহকর্তার স্ত্রী ফহিমা বেগম মোবাইল ফোনে তার ভাইকে জানাতে গেলে ছাত্রলীগ নেতা আসাদ মোবাইলটি কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলে। এ সময় গৃহকর্তা খলিলুর রহমানকে মারধর করে ঘটনা কাউকে না জানানোর জন্য হুমকি দেয়।
ঘটনা শুনে বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থানীয় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গেলে আশাপাশের লোকজন এ ব্যপারে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি। এ সময় ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে সাংবাদিকদের কাছে ঘটনার বর্ণনা করেন ওই পরিবারটি।
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য মো. আব্দুর রহিম হাওলাদার ঘটনা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন— ঘটনার সময় আমি সেখানে উপস্থিত থাকলেও জমি দখল বা কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে অবরুদ্ধ করার ঘটনায় আমি জড়িত নই।
ছাত্রলীগ নেতা আসাদুজ্জামান আসাদ কাঁটাতারের বেড়া দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন— খলিলের বাড়ির মধ্যে আমার পাওনা জমি কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে দখলে নেওয়া হয়েছে। আমাদের জমির ওপর দিয়ে তাদের বের হতে দেয়া হবেনা।
খোন্তাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন খান মহিউদ্দিন বলেন— একটি পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রাখা অমানবিক ও বেআইনি। ঘটনায় জড়িতরা যে দলেরই হোক না কেনো তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ।
শরণখোলা উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক মো. হাসান মীর বলেন— আসাদ ছাত্রলীগের কোনো কমিটিতে নেই। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসীসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। তার কোনো বিষয়ে ছাত্রলীগ দায়িত্ব নেবে না।
শরণখোলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কবিরুল ইসলাম পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ঘটনা তাকে কেউ জানায়নি। তবে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিংকন বিশ্বাস পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য থানা পুলিশকে বলা হয়েছে।
সৌজন্যে- সমকাল