বিতর্ক উস্কে দিয়ে দক্ষিণ চীন সাগরে অবস্থিত দ্বীপে সামরিক মহড়ার অংশ হিসেবে ফের যুদ্ধবিমান মোতায়েন করল বেজিং। চীনের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়, পিপলস লিবারেশন আর্মি এইচ-৬কে এর কয়েকটি যুদ্ধবিমান মহড়ার জন্য দ্বীপে অবতরণ করেছে। এতে এই অঞ্চলে আমাদের শক্তির উন্নয়ন ঘটবে এবং যেকোনো সময় হামলা ও প্রতিহত করতে সক্ষম হব আমরা।
সাগরের এই পানিসীমার মালিকানা নিয়ে কয়েকটি দেশের মধ্যে বিরোধ চলছে। অনেক দিন ধরেই এই অঞ্চলে কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি এবং সামরিক কাঠামো নির্মাণ করে আসছে চীন। অন্যদিকে এই অঞ্চলে ‘সামরিকীকরণ’ নিয়ে আমেরিকা ও চীন দীর্ঘ দিন ধরেই পরস্পরকে দোষারোপ করে আসছে। দক্ষিণ চীন সাগরের ওই অঞ্চল নিজেদের দাবি করে বেইজিং। আর আমেরিকার দাবি সেটি আন্তর্জাতিক সীমারেখার অন্তর্ভূক্ত। চীন জানায়, এইচ-৬কে’র পাইলটরা সেখানে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। পশ্চিম প্রশান্ত সাগর ও দক্ষিণ চীন সাগরের লড়াইয়ের কারণেই এই প্রশিক্ষণ। তবে মহড়া ঠিক কোথায় হচ্ছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি। পেন্টাগনের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল ক্রিস্টোফার লোগান বলেন, আমেরিকা উন্মুক্ত ও স্বাধীন ইন্দো-প্যাসিফিক সাগর রক্ষায় বিশ্বাসী। আমরা চীনের সামরিকীকরণের খবর পেয়েছি। এতে শুধু উত্তেজনাই বৃদ্ধি পাবে।
এদিকে বিতর্কিত দক্ষিণ চীন সাগরে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় তেল প্রতিষ্ঠান রোজনেফট তেল অনুসন্ধান শুরু করায় চীন ক্ষুব্ধ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে ওই কোম্পানির ভিয়েতনাম শাখা। রোজনফট জানায়, রাশিয়ার প্রতিষ্ঠানটি দক্ষিণ চীন সাগরে গ্যাসক্ষেত্র অনুসন্ধান শুরু করেছে। অনুসন্ধানের স্থানটি ভিয়েতনাম থেকে ২৩০ মাইল দক্ষিণ-পূর্বদিকে অবস্থিত। জ্বালানি পরামর্শক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান উড ম্যাকেঞ্জি জানায়, অনুসন্ধান ক্ষেত্রটি চীনের ‘নাইন-ড্যাশ লাইনের’ মধ্যে পড়েছে। ইংরেজি অক্ষর ‘ইউ’ আকৃতির ‘নাইন ড্যাশ-লাইন’ দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের বিস্তৃতি ভিয়েতনামের বিশেষ অর্থনৈতিক জোনের কিছু এলাকাও পড়েছে। চীন ওই এলাকার মালিকানা দাবি করেছে। গত কয়েক বছরে অঞ্চলটিতে টহল দিচ্ছে চীনের নৌবাহিনী।
একটি সূত্র জানায়, মার্চ মাসে চীনের চাপে ‘রেড এম্পেরর’ এলাকায় তেল অনুসন্ধান প্রকল্প বাতিল করে ভিয়েতনাম। ওই ক্ষেত্রটি স্পেনের কোম্পানি রেপসল লিজ নিয়েছিল। তখন প্রকল্প বাতিল করায় রেপসল ক্ষতিপূরণ চায় ভিয়েতনামের কাছে। চীনের পক্ষ থেকে চাপের আশঙ্কায় রোসনেফট ভিয়েতনাম অনেকটা গোপনেই অনুসন্ধান শুরু করতে চায়।