৯২ বছরের মাহাথির মোহাম্মদ মালয়েশিয়ার সপ্তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীন রাষ্ট্রনেতা হলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত ৯টা ৫৭ মিনিটে রাজধানী কুয়ালালামপুরে প্রাক্তন বিরোধী দলীয় জোট পাকাতান হারাপানের নেতা মাহাথিরকে শপথ পড়ান মালয়েশিয়ার রাজা সুলতান মুহাম্মদ চতুর্থ। শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মাহাথিরের স্ত্রী ড. সিটি হাসমাসহ জোটের শীর্ষ নেতারা।
এর আগে সংবাদ সম্মেলনে মাহাথির জানিয়েছিলেন, তার প্রাক্তন ঘনিষ্ঠ সহযোগী আনোয়ার ইব্রাহিমের স্ত্রী ড. ওয়ান আজিজাহকে উপপ্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেবেন।
১৯৮১ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত একটানা মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন মাহাথির। বুধবারের জাতীয় নির্বাচনে মাহাথিরের জোট ২২২টি আসনের মধ্যে ১১৩টিতে জয় পায়।
মাহাথিরের এ জয় নানা কারণেই অবিস্মরণীয়। যে বারিসান ন্যাশনাল জোটকে হারিয়ে তিনি এ নির্বাচনে জয়ী হলেন, এক সময় এই জোট থেকেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে ২২ বছর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মাহাথির।
দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে মাহাথির উজ্জ্বল এক নাম। তার হাত ধরেই আধুনিক মালয়েশিয়ার গোড়াপত্তন হয়। কিন্তু ৯২ বছর বয়সে রাজনীতিতে নেমে ৬০ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা একটি জোটকে পরাজিত করা মোটেও সহজ ছিল না।
মালয়েশিয়ার ১৪তম এ সাধারণ নির্বাচনকে গড়পড়তা হিসেবেই ধরে নিয়েছিলেন সবাই। নির্বাচনে নাজিব রাজাকের বিজয়ও নিশ্চিত দেখতে পাচ্ছিলেন সবাই। কিন্তু মাহাথির নির্বাচনে নামার ঘোষণা দেয়ার পরই পাল্টে যেতে থাকে ভোটের হিসাব। নির্বাচনী মাঠে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
তারপরও ‘বুড়ো’ মাহাথিরকে নিয়ে অনেকেরই সন্দেহ ছিল। কিন্তু মাহাথির তাদের ভুল প্রমাণ করেছেন। নির্বাচনী প্রচারের সময় মাহাথির বারবার বলেছেন, ‘মালয়েশিয়ানরা পরিবর্তনে ভয় পায়।’ তবে জয়ী হওয়ার পরপরই মাহাথির বলেছেন, তিনি কোনো প্রতিশোধ নিতে চান না, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চান।