জলে-স্থলে সমান গতিতে চালানো যায়, এমন বাইসাইকেল উদ্ভাবন করেছেন ফরিদপুরের কানাইপুর ইউনিয়নের যুবক জমির হোসেন। সাইকেলটির পরীক্ষামূলকভাবে চালানোর সময় পুকুরপাড়ে শত শত উৎসুক শিশু, নারী-পুরুষ ভীড় জমান বলে জানান স্থানীয় সাংবাদিকরা।
জমিরের এ উভযানটি পানিতে ঘন্টায় ২০ থেকে ৩০ কিলোমিটার বেগে চলতে পারে। মূলত গ্রামাঞ্চলের যেখানে নদী কিংবা খালের ওপর সেতু নেই সেসব জায়গায় এটা সবচেয়ে কাজে লাগবে। সাইকেলের চালক যদি সাঁতার না জানেন তাতেও সমস্যা নেই। সেফটি বেল্ট থাকায় চালক সিট থেকে পড়ে গেলেও পানিতে ভেসে থাকতে পারবেন।
সরেজমিন দেখা যায়, সাইকেলটির প্যাডেলের সাথে পেনিয়াম সেট করে পেছনে স্পিডবোটের পাখার আদলে শক্তিশালী পাখা লাগানো হয়েছে। পায়ের প্যাডেল একপাক ঘুরালে পাখাটি কমপক্ষে ৫০ বার ঘুরবে। আর এতে বেশ স্পিডে পানিতে চলবে বাইসাইকেলটি। সাইকেলটিকে পানিতে ভাসিয়ে রাখতে ব্যবহার করা হয়েছে নমনীয় বায়ুভর্তি টিউব।
উদ্ভাবক জমির হোসেন স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, যখন বাইসাইকেলটি সাধারণ রাস্তায় চলবে, তখন বাতাসবিহীন টিউব বাইসাইকেলের পেছনের একটি বাক্সে থাকবে। যখন বাইসাইকেলটি পানিতে চলবে, তখন শুধু দুটি টিউবে হাওয়া দিয়ে বাইসাইকেলের সাথে নাটবোল্ট লাগিয়ে ফেলা যাবে মাত্র ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে। এছাড়া স্থায়ীভাবে পানি দিয়ে চালানো বাইসাইকেলটিতে টিউবের পরিবর্তে পিভিসি পাইপ দিয়েও একইভাবে ব্যবহার করা যাবে।
সাইকেলটি বানাতে প্রায় ১২ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে জানিয়ে জমির হোসেন বলেন, আমার বাবা সামান্য ভ্যানচালক। তাই ইলেকট্রিক কাজ ও রিক্সাভ্যান মেরামত করে আমাকে সংসারে অার্থিক সহযোগিতা করতে হয়। লেখাপড়ার পাশাপাশি মা-বাবাকে নিয়ে সংসার চালানোর পর যা কিছু অবশিষ্ট থাকে, তা দিয়ে কিছু তৈরি করার চেষ্টা করি।
কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বেলায়েত ফকির বলেন, দরিদ্র জমির হোসেন ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ার পাশাপাশি নানা ধরনের জিনিস উদ্ভাবন করে আসছে। সে যদি আর্থিক সহায়তা পায়, তবে আরও ভালো কিছু করতে পারবে
সৌজন্যে- অর্থসূচক