বাংলাদেশী বৈমানিক ও কেবিন ক্রুদের জন্য চীনের এভিয়েশন খাতে চাকরির বাজার খুলতে যাচ্ছে। চাহিদা থাকা সত্ত্বেও চীনে কাজের সুযোগ পেতেন না বাংলাদেশের বৈমানিকরা। তবে ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের (আইকাও) সেফটি স্ট্যান্ডার্ড কমপ্লায়েন্সে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) র্যাংকিং বৃদ্ধি পাওয়ায় বৈমানিকদের পাশাপাশি কেবিন ক্রুদেরও চীনে চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি বেবিচকের সদস্য (পরিকল্পনা ও পরিচালনা) মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল এয়ার সার্ভিসেস এগ্রিমেন্ট কনসেন্ট্রেশন বৈঠকে যোগ দিতে তিনদিনের সফরে চীনে যান। এ সময় সিভিল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব চায়না’র সঙ্গে এভিয়েশন খাতের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন বেবিচকের প্রতিনিধিরা। বৈঠকে বাংলাদেশী বৈমানিক ও কেবিন ক্রুদের চাকরির সুযোগ নিয়ে আলোচনা হলে চীনা কর্তৃপক্ষ র্যাংকিং নিয়ে আপত্তির কথা বেবিচককে জানায়।
বৈঠকে বেবিচক জানায়, ২০১৭ সালে আইকাও বাংলাদেশে ভেলিডেশন মিশন অডিট সম্পন্ন করে। এতে ৭৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ স্কোর অর্জন করে বাংলাদেশ। আইকাও’র ছয় সদস্যবিশিষ্ট একটি দল বাংলাদেশে আটটি বিষয়ে অডিট করে। বিষয়গুলো হচ্ছে— বাংলাদেশে বেসামরিক বিমান চলাচলে প্রাইমারি এভিয়েশন লেজিসলেশন, অর্গানাইজেশন, পার্সোনেল লাইসেন্সিং, অপারেশনস, এয়ারওয়ার্দিনেস, এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন, এয়ার নেভিগেশন সার্ভিসেস, এরোড্রোমস অ্যান্ড গ্রাউন্ড এইডস। গত ২৭ সেপ্টেম্বর অডিট দল বাংলাদেশের সাফল্য ঘোষণা করে। বৈঠকে বেবিচকের সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ও পরিচালক চৌধুরী জিয়াউল কবির সিভিল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব চায়নার কর্মকর্তাদের সামনে র্যাংকিংয়ের হালনাগাদ তথ্য উপস্থাপন করেন। বাংলাদেশের র্যাংকিং স্কোর ৬০ অতিক্রম করায় বাংলাদেশী বৈমানিক ও কেবিন ক্রুরা চীনে কাজের সুযোগ পাবেন বলে এ সময় আশ্বাস দেন সিভিল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব চায়নার কর্মকর্তারা।
এ প্রসঙ্গে বেবিচকের পরিচালক (ফ্লাইট সেফটি অ্যান্ড রেগুলেশনস) উইং কমান্ডার চৌধুরী এম জিয়াউল কবির বলেন, চীনের কাছে আমাদের র্যাংকিংয়ের হালনাগাদ তথ্য ছিল না। এবার বৈঠকে তাদের সামনে এসব তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। সিভিল এভিয়েশনের র্যাংকিং ৬০-এর নিচে হলে চীন সেসব দেশের বৈমানিকদের কাজ করার সুযোগ দেয় না। আমাদের র্যাংকিং এখন ৭৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এশিয়ার দেশগুলোর মধ্য বাংলাদেশের অবস্থান নেতৃস্থানীয়। আইকাও’র সেফটি স্ট্যান্ডার্ড কমপ্লায়েন্সে (ইফেকটিভ ইমপ্লিমেন্টেশন) কাতারের অবস্থান ৬৩ দশমিক ৮১ শতাংশ, রাশিয়া ৭০ দশমিক ৮৭ শতাংশ, মালয়েশিয়া ৭৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়া ৫১ দশমিক ৬১ শতাংশ, ভারত ৬৫ দশমিক ৮২ শতাংশ। বাংলাদেশের এ অর্জনের ফলে বিশ্বে বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্মকাণ্ডের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশী বেসামরিক বিমান পরিবহন কার্যক্রম ও কাজের ক্ষেত্র অনেক গুণ বৃদ্ধি পাবে।
সূত্র- বণিক বার্তা