উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সাথে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আলোচনা সত্যিই হবে কিনা তা নিয়ে অনেকের মনে সন্দেহ রয়েছে। আর তা হলে কিভাবে হবে, তার ফল কী হবে সেটি নিয়েও রয়েছে অনেক জল্পনা কল্পনা।
চলুন জেনে নেয়া যাক এই সঙ্কট আসলে কি নিয়ে।
উত্তর কোরিয়া কেন পারমাণবিক অস্ত্র চায়?
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কোরিয়ান উপদ্বীপ বিভক্ত করে ফেলা হয়। উত্তর কোরিয়া স্ট্যালিনপন্থী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্রটিকে শুরু থেকেই স্বৈরতান্ত্রিক বলা হয়ে থাকে। উত্তর কোরিয়া সব সময় বিশ্ব রাজনীতি থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছে। উত্তর কোরিয়া মনে করে বহির্বিশ্বের আক্রমণ ঠেকাতে পারমানবিক শক্তিই তাদের জন্য একমাত্র উপায়।
উত্তর কোরিয়া কি সত্যিই পারমাণবিক হামলা চালাতে সক্ষম?
সম্ভবত সক্ষম কিন্তু তারা সত্যিই এমন হামলা চালাবে তা মনে হয় না। উত্তর কোরিয়া এ পর্যন্ত ছয়বার পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে। দেশটির দাবি এর একটি হাইড্রোজেন বোমা। উত্তর কোরিয়া আরো দাবি করে যে তারা এমন একটি পরমাণু অস্ত্র তৈরি করেছে যা দুর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দ্বারা বহন করা যাবে এমন ছোট আকারের। যদিও এই দাবি নিরপেক্ষ সূত্র দ্বারা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। তবে দেশটির এই দাবির জবাবে জাতিসঙ্ঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও ইওরোপিও ইউনিয়ন উত্তর কোরিয়ার উপরে তাদের অবরোধ আরো কঠোর করেছে।
কিম জং উনকে কেন ক্ষমতা থেকে অপসারণ সম্ভব নয়?
দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের দিকে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র তাক করা রয়েছে। কোন হামলার জবাবে বিধ্বংসী প্রতিশোধ নিতে পারে উত্তর কোরিয়া।আর তাছাড়া এশিয়ার সবচাইতে শক্তিশালী দেশ চীন উত্তর কোরিয়া শাসক পরিবর্তন চায় না। তাদের ধারনা উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া একত্রিত হয়ে গেলে একদম তাদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেবে মার্কিন সেনাবাহিনীকে। দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থানরত মার্কিন সেনারা তাদের সীমানা পর্যন্ত পৌঁছে যাবে বলে চীনের আশংকা।
অভূতপূর্ব কিছু কি সামনে অপেক্ষা করছে?
পূর্বে সাহায্যের বিনিময়ে উত্তর কোরিয়ার প্রতি অস্ত্র সমর্পণের বেশ কিছু প্রস্তাব ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু এই জানুয়ারিতে দক্ষিণ কোরিয়ায় শীতকালীন অলিম্পিকসকে ঘিরে উত্তর কোরিয়ার সাথে সরাসরি আলাপের এক সুযোগ তৈরি হয়েছে। যার প্রস্তাব এসেছিলো স্বয়ং পিয়ং ইয়ং থেকে। একই রকম ভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে আলাপের প্রস্তাব দেয় উত্তর কোরিয়া। যে প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন ট্রাম্প। এর ফলশ্রুতিতে আপাতত পারমাণবিক কর্মসূচি স্থগিত রাখার আদেশ দিয়েছে পিয়ং ইয়ং। ট্রাম্প ও কিম যদি সত্যিই আলাপে মিলিত হন তবে তা হবে অভূতপূর্ব। যদিও সম্ভাব্য এই সাক্ষাৎ সম্পর্কে কোন ধরনের বিস্তারিত তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।