সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইন্সে মাঝ-আকাশে দুর্ঘটনায় পড়ার পর বিমানের ভেতরকার একটি ছবিতে দেখা যায়, যাত্রীদের প্রায় সকলেই ভুলভাবে অক্সিজেন মাস্ক পড়ে রয়েছেন।
এরপর এ নিয়ে শুরু হয় তুমুল বিতর্ক। এই প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠেছে, মানুষ কেন ভুল ভাবে অক্সিজেন মাস্ক পড়ে?
সাবেক একজন ব্রিটিশ ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট ববি ল্যরি বলছেন, বিমান ভ্রমণের সময় যাত্রীরা প্রায় কেউই ভ্রমনকালীন সময়ের নির্দেশনাগুলো ঠিক মত শোনেন না।
বিমান আকাশে ওড়ার পরপরই ক্রুরা ইন-ফ্লাইট ডেমনস্ট্রেশন, অর্থাৎ ভ্রমনকালীন সময়ে করনীয় সম্পর্কে যেসব ব্যাখ্যা দেন, তা প্রায় কেউই মন দিয়ে শোনেন না। সবাই মনে করেন, কোন বিপদ আসার সম্ভাবনা কেউ পাত্তাই দিতে চাননা। কিন্তু জরুরী মূহুর্তে যাত্রীদের নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখা না গেলে, অক্সিজেনের অভাবে একজন মানুষের মৃত্যুও ঘটতে পারে।
এছাড়া রয়েছে ভুলভাবে অক্সিজেন মাস্ক পড়া। ভ্রমনকালীন সময়ে তিনটি উপায়ে যাত্রীদের বলা হয়, কিভাবে অক্সিজেন মাস্ক ব্যবহার করতে হয়। শুরুতে ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট হাত নেড়ে বুঝিয়ে দেন। এরপর যাত্রীদের সিট পকেটে রাখা সেফটি কার্ডেও লেখা থাক নির্দেশনা।
আর সর্বোপরি যখন মাথার ওপর থেকে অক্সিজেন মাস্কটি যাত্রীদের একেবারে মুখের সামনে ঝুলে পড়ে, যে ব্যাগটির ভেতরে মাস্ক থাকে তার গায়েও লেখা থাকে নির্দেশনা। এগুলো খেয়াল করতে হবে।
এজন্য কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখার পরামর্শ দেন মিঃ ল্যরি। প্রথমেই দেখতে হবে অক্সিজেন মাস্কটি যেন মুখ ও নাকের পুরোটা ঢেকে দিতে পারে। এরপর মাস্কের সাথে লাগানো প্লাস্টিকের ব্যান্ডটি মাথার পেছনে টেনে দিতে হবে, যাতে সেটি মাস্কটিকে মুখের সঙ্গে আটকে রাখতে পারে।
কোন কারণে মাস্কটি অকার্যকর মনে হলে, ঘাবড়ে না গিয়ে ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টকে জানাতে হবে। প্রয়োজনে পাশের যাত্রীর সঙ্গেও ভাগাভাগি করে নেবার মানসিকতা থাকতে হবে।
তবে, মিঃ ল্যরি তার অভিজ্ঞতায় দেখেছেন, কোন সমস্যা দেখা দিলে যাত্রীদের মধ্যে এক ধরণের তাড়াহুড়া শুরু হয়ে যায়, দ্রুত কিভাবে মাস্কটি পড়তে পারবেন। তাছাড়া আসন্ন কোন বিপদের আশংকায় অনেকেই নার্ভাস হয়ে পড়েন। অনেকেই হয়তো একসঙ্গে অভিযোগ জানান যে কেন বিষয়টি তাকে আগে জানানো হলো না।
কিন্তু সাধারণত ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টরা তাদের পেশাগত দায়িত্ব হিসেবে তর্ক করেন না।হাসিমুখে বলেন, আমরা জানাতে চেষ্টা করেছিলাম, এখন দয়া করে আপনারা নিজের আসনে ফিরে যান।