এবার প্রেমের টানে হাজারো মাইল পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন আমেরিকান নারী শ্যারুন খান। ৬ এপ্রিল ঢাকায় আসেন তিনি। ফরিদপুরের ছেলে আশরাফ উদ্দিনের কাছে এসেছেন তিনি।
আশরাফ ফরিদপুর সদর উপজেলার কানাইপুর ইউনিয়নের ঝাউখোলা গ্রামের মো. আলাউদ্দিন মাতুব্বরের ছেলে। ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্স শেষ বর্ষের ছাত্র আশরাফ পড়াশোনা করেন ঢাকার কবি নজরুল ইসলাম কলেজে। এক ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সবার বড় তিনি। আশরাফের বাবা পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের গাড়িচালক। পরিবারটি থাকে ফরিদপুরের নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের স্টাফ কোয়ার্টারে।
শ্যারুন খান আমেরিকান মুসলিম। তিনি নিউইয়র্কে একটি ব্যাংকে কাজ করছেন। তাঁর বাবা সলেমান খান ও মা এলিজা খান। দুই বোনের মধ্যে শ্যারুন বড়।
আশরাফ উদ্দিন (২৬) জানান, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে এক বছর আগে শ্যারুনের (৪০) সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। ছয় মাস ধরে চলছিল মন দেওয়া-নেওয়া। এরপরই বিয়ের সিদ্ধান্ত। ১০ এপ্রিল তাঁরা বিয়ে করেছেন।
আশরাফের বাবা মো. আলাউদ্দিন মাতুব্বর বলেন, ‘আশরাফ ও শ্যারুন দুজনেই খুব সুখে আছে। আমরা তাঁদের দোয়া করি।’ অন্যদিকে মা নার্গিস আক্তার বলেছেন, ছেলের এমন বউ পেয়ে তিনি খুশি। ছেলেকে দেশে বিয়ে দিলেও এত ভালো বউমা পাওয়া যেত না।
এই দম্পতি ১৩ এপ্রিল ফরিদপুর আসেন। বিষয়টি প্রথমে গোপন রাখা হয়েছিল। পরে তা জানাজানি হলে ভিড় জমায় কৌতূহলী মানুষ। এ বিষয়টি বেশ উপভোগ করছেন আমেরিকার মেয়ে শ্যারুন। এলাকার সবাইকে আপন করে নিয়েছেন তিনি। আর মাঝেমধ্যে ইংরেজি ঢঙে ভাঙা ভাঙা বাংলায় কথা বলছেন।
কেন শ্যারুনকে জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিলেন—এমন প্রশ্নের উত্তরে আশরাফ বলেন, ‘শ্যারুনের মন আমাকে আকৃষ্ট করেছে। তাঁর মধ্যে কোনো জটিলতা, সন্দেহ বা অবিশ্বাসের ছায়া আমি দেখিনি। আমার মনে হয়েছে, আমি তাঁর মধ্যে শান্তি খুঁজে পাব। বয়স বেশি-কম বা বাহ্যিক সৌন্দর্য বিচার্য বিষয় নয়।’
শ্যারুন ভাঙ ভাঙা বাংলায় জানান, ‘আশরাফ খুব যত্ন করে, খোঁজখবর নেয়। আমেরিকায় সবাই খুব ব্যস্ত। কেউ কারও খবর নেয় না। কিন্তু আশরাফ প্রায় প্রতিটি মুহূর্তে আমার খোঁজখবর নিত। এতে আমি আপ্লুত। আমার মনে হয়েছে প্রেম বা বিয়ে যাই হোক না কেন—সম্পর্কের মূল ভিত্তি হচ্ছে কেয়ারিং।’
বাংলাদেশে এসে খুব ভালো লাগছে বলে জানিয়েছেন শ্যারুন খান। তিনি বলেন, ২১ এপ্রিল তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাবেন। ছয় মাসের মধ্যে আশরাফও আমেরিকা যেতে পারবে বলে জানান শ্যারুন।
সূত্র- প্রথম আলো