সৌদি আরবের পররাষ্ট্র নীতি দেশের ভেতরে এবং বাইরে ব্যর্থ হচ্ছে। রিয়াদের চাপিয়ে দেয়া নীতিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কাজ করছেন দেশটির অন্যতম মিত্র সংযুক্ত আরব আমিরাতের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন জায়েদ (এমবিজেড)।
লেবাননের দৈনিক আল-আখবার সৌদি-আমিরাতের বেশ কিছু গোপন কূটনৈতিক নথির ভিত্তিতে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। মঙ্গলবার আল-আখবারের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাত ও জর্ডানের রাষ্ট্রদূতদের নিজ নিজ দেশের সরকারের সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঠানো গোপন কূটনৈতিক বার্তা লেবাননের ওই দৈনিকের হাতে এসেছে। আল-আখবার বলছে, বৈরুতে পাঠানো আমিরাত এবং জর্ডানের রাষ্ট্রদূতদের গোপন কূটনৈতিক ব্রিফিংয়ের নথি ফাঁস হয়েছে।
গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বরের একটি নথিতে লেবাননে নিযুক্ত জর্ডানের রাষ্ট্রদূত নাবিল মাসারওয়া ও কুয়েতের রাষ্ট্রদূত আবদেল-আল আল কিনাইয়ের বৈঠকের মূল বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়।
ওই বৈঠকে কুয়েতের রাষ্ট্রদূতকে উদ্ধৃত করে জর্ডানের রাষ্ট্রদূত বলেন, সৌদি আরবের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করতে কাজ করছেন আবু ধাবির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন জায়েদ।
২৮ সেপ্টেম্বরের এক নথিতে জর্ডানের রাষ্ট্রদূত ও আমিরাতের রাষ্ট্রদূত হামাদ বিন সায়িদ আল-শামসির বৈঠকের সারাংশ তুলে ধরা হয়। এই নথিতে বলা হয়, জর্ডানের রাষ্ট্রদূত তার দেশের সরকারকে জানিয়েছেন, আমিরাত মনে করে সৌদি নীতি দেশের ভেতরে এবং বাইরে; বিশেষ করে লেবাননে ব্যর্থ হয়েছে।
জর্ডানের রাষ্ট্রদূত বলেন, সৌদি নীতিতে সন্তুষ্ট নয় সংযুক্ত আরব আমিরাত।
কাতারের ভোট- ফাঁস হওয়া নথিতে দেখা যায়, আমিরাতের রাষ্ট্রদূত দাবি করেছেন যে, ২০১৭ সালের অক্টোবরে ইউনেস্কোর প্রধানের পদের নির্বাচনে কাতারের হামাদ বিন আব্দুল আজিজ আল কাওয়ারিকে ভোট দিয়েছে লেবানন।
(লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ) হারিরি জানতেন কাতারকে ভোট দিচ্ছে লেবানন। গত বছরের ১৮ অক্টোবর আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত নিজ দেশের সরকারের কাছে পাঠানো এক তারবার্তায় এ তথ্য জানান।
একই বছরের নভেম্বরে সৌদি অারবের রাজধানী রিয়াদে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের আকস্মিক ঘোষণা দেন। পরবর্তীতে তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত বাতিল করে ইরান এবং লেবাননে তেহরানের মিত্র হেজবুল্লাহকে তার পদত্যাগের জন্য দায়ী করেন। একই সঙ্গে তিনি গুপ্তহত্যার শিকার হতে পারেন বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন।
লেবাননের কর্মকর্তারা সেই সময় জানান, সৌদি কর্তৃপক্ষ সাদ হারিরিকে জিম্মি করে পদত্যাগে বাধ্য করেছে। তবে পদত্যাগের পর দেয়া প্রথম বিবৃতিতে হারিরি এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন।