Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

soudi arab womanসৌদি আরবে খেলাধুলার উপযোগী ও রঙিন আবায়া (সৌদি আরবের নারীদের বিশেষ পোশাক) খুব দ্রুত নারীদের স্বাভাবিক পোশাকে পরিণত হচ্ছে। একসময় দেশটির কট্টর রক্ষণশীল সমাজব্যবস্থায় এ পোশাককে সাংস্কৃতিক বিপ্লব হিসেবে দেখা হতো।
গত মাসে লোহিত সাগর তীবরর্তী নগরী জেদ্দায় নারী দৌড়বিদদের ছবি ভাইরালে পরিণত হয়েছিল। খবর এএফপি।

ঐতিহ্যবাহী সম্পূর্ণ কালো পোশাকের পরিবর্তে দেশটিতে রঙিন পোশাক চালু হওয়ায় নতুন করে এ পোশাক বিতর্ক দেখা দিয়েছে। সৌদি আরবে জনসম্মুখে নারীদের সম্পূর্ণ শরীর কালো পোশাকে ঢাকা বাধ্যতামূলক। কোন কোন কট্টরপন্থী রক্ষণশীল ব্যক্তি অনলাইনে ক্ষোভ প্রকাশ করে একে সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের লঙ্ঘন হিসেবে অভিহিত করেছেন।

chardike-ad

কিন্তু নারীদের পোশাক সম্পর্কে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সাম্প্রতিক মন্তব্যের পর বিরোধীরা আর মুখ খোলেননি। তিনি বলেছেন- ইসলামে আবায়া বাধ্যতামূলক নয়। নতুন ধরনের পোশাকের ডিজাইনার ইমান জোহারি জেদ্দায় তার ফ্যাশন স্টুডিও থেকে বলেন, ‘এ ধরনের পোশাকের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।’

এই নারী ডিজাইনার আরও বলেন, ‘বিভিন্ন রঙের কাপড় পরাও নারীদের এক ধরনের ক্ষমতায়ন।’

৪৩ বছর বয়সী এ ডিজাইনার সবুজ, বাদামি-ধূসর ও সাদা রঙকে প্রাধান্য দেন। তিনি ফরাসি পপলিনসহ ন্যাচারাল ফেব্রিক্সের ওপর কাজ করেন। কারণ এগুলো ক্রীড়াবিদদের ঘর্মাক্ত শরীরের সঙ্গে লেপ্টে থাকে না বলে তাদের জন্য আরামদায়ক। ইমান ২০০৭ সালে নারীদের জন্য এই স্পোর্টস আবায়া ডিজাইন করেন। তিনি বলেন, ‘এখানে কিছুটা বৈপ্লবিক পরিবর্তনের বিষয় রয়েছে। কিন্তু আমি এটি আমার নিজের জন্য করছি।’

ইমান সৌদি আরবের প্রচলিত ধারণা ‘কালো না হলে আবায়া নয়’ ভেঙে দিয়েছেন। নতুন এ ফ্যাশনটি ব্যাপক চলছে। সৌদি আরবে নারীদের জীবনযাত্রায় ব্যাপক ও যুগান্তকারী পরিবর্তন ঘটছে। কর্তৃপক্ষ ঐতিহাসিক ডিক্রি জারি করে এ বছরের জুন মাস থেকে নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি দিয়েছে।

এটি কর্তৃপক্ষের একটি বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত। এ ছাড়া প্রথমবারের মতো নারীদের স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলা উপভোগ করার অনুমতিও দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া সরকার নারীদের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা চালু করতে চাইছে এবং মেয়েদের জন্য শারীরিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে যাচ্ছে।

২০১৪ সালে দেশটিতে নারীদের খেলাধুলার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়। সৌদি কর্মকর্তারা সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছেন, নারীরা আগামী বছর রিয়াদ আন্তর্জাতিক ম্যারাথনে অংশ নিতে পারবে। এর আগে এতে শুধু পুরুষরাই অংশ নিতে পারত। দীর্ঘদিন ধরেই ধর্মীয় পুলিশ জনসম্মুখে নারীদের শরীর চর্চায় বাধা দিয়ে আসছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ধর্মীয় পুলিশের ক্ষমতা কমানো হয়েছে।

যুবরাজ সালমান গত মাসে সিবিএস টিভিকে বলেন, ‘ইসলামে শরিয়া আইন খুবই স্পষ্ট। নারীরা পুরুষদের মতোই মার্জিত ও শালীন পোশাক পরবেন।’ তিনি বলেন, ‘ইসলামে কালো রঙের আবায়ার বাধ্যবাধ্যকতা নেই। নারীদের ইচ্ছেমতো তাদের সম্মানহানি না হয় এমন শালীন ও মার্জিত পোশাক পছন্দ করার সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে।’

বিশিষ্ট আলেম শেখ আহমেদ বিন কাশিম আল-গামদিও ইসলামে শুধু কালো রঙের আবায়ার অনুমোদনের বিষয়টি নাকচ করে দিয়েছেন। তার এই মন্তব্য দেশটির পোশাক বিতর্কে নতুন মোড় নিল। পবিত্র মক্কা নগরীর ধর্মীয় পুলিশের সাবেক এ প্রধান সৌদি মালিকানাধীন আল আরাবিয়া টেলিভিশনকে বলেন, ‘ইসলামে বর্ণিত ঢিলাঢালা পোশাকের অর্থ মার্জিত ও শালীন পোশাক পরা। শুধু কালো রঙের পোশাক পরা নয়।’