মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্পর্কে সম্প্রতি বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন এফবিআইয়ের সাবেক পরিচালক জেমস কোমি। তিনি বলেন, নৈতিকতার দিক থেকে প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্য নন ট্রাম্প। রোববার রাতে এবিসি নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে এমন মন্তব্য করেন কোমি।
তবে তার মতে ট্রাম্প শারীরিকভাবে মোটেও অযোগ্য নন। ট্রাম্পের মানসিক অবস্থা নিয়ে যারা প্রশ্ন তোলেন দাবিকেও নাকোচ করে দিয়েছেন কোমি।
সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, আমি মনে করি, ট্রাম্প নৈতিকভাবে অযোগ্য, কারণ তিনি নারীদের ‘মাংসের টুকরো’ বলে মন্তব্য করেছেন। কোনো বিষয় ছোট হোক বা বড় হোক তিনি অনবরত মিথ্যা বলে যান। তিনি এটাও বলে থাকেন যে, তার কথা মানুষ বিশ্বাস করে।
কোমি বলেন, একজন প্রেসিডেন্টকে অবশ্যই জাতির মৌলিক মূল্যবাধকে সম্মান করতে হবে, মানতে হবে। সবার প্রথমে তাকে সত্যবাদী হতে হবে। আমি মনে করি, তার মধ্যে এসব নেই এবং তিনি প্রেসিডেন্ট হবার জন্য নৈতিকভাবে অযোগ্য।
সাবেক এই এফবিআই পরিচালক বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এমন কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন যা ন্যায় বিচারেরর ক্ষেত্রে বাধা এবং এ বিষয়ে যথেষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ আছে।
‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন আপনাকে সাবেক হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিনের বিরুদ্ধে এফবিআইয়ের তদন্ত শেষ করতে বলেছিলেন-তার এই পদক্ষেপটিকেই কি আপনি ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে বাধা বলে মনে করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে কোমি বলেন, সম্ভবত।
ট্রাম্প কোমির এই কথোপকথনকে অস্বীকার করেছেন। তবে কোমি বলেছেন, ট্রাম্প এটি অবশ্যই বলেছিলেন। তিনি বলেন, ন্যায়বিচারকে বাধাগ্রস্ত করার অবশ্যই কিছু সাক্ষ্য-প্রমাণ আছে যদিও তিনি এই বলে মন্তব্য করেন যে, সে শুধু কিছু ঘটনার সাক্ষী, অনুসন্ধানকারী বা কৌশুলি নন।
কোমি ট্রাম্পকে নিয়ে নতুন একটি বই বের করেছেন এবং ট্রাম্পের ক্ষোভকে আরও বাড়িয়ে তুলেছেন। প্রেসিডন্টে ট্রাম্প কোমিকে ‘মিথ্যাবাদী’ ও ‘ফাঁসকারী’ বলে মন্তব্য করেছেন।
সাক্ষাতকারে সাবেক এই এফবিআই প্রধান বলেন, আমি মনে করি এটা সম্ভব যে, ট্রাম্প হয়তো রাশিয়ার সাথে আপোষ করেছেন। কোমি বলেন, রাশিয়া হয়তো প্রেসিডেন্টের সাথে কিছু করেছে-এ সম্ভাবনাকে আমি উড়িয়ে দেব না।
তবে সাক্ষাৎকারে কোমি হিলারি ক্লিনটনের ইমেইল তদন্তের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেন নি। শনিবার সাক্ষাতকারের কিছু অংশ সম্প্রচার করা হয়। সেখানে দেখা যায়-কোমি বলছেন, হিলারি ক্লিনটন ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভ করবেন তার এমন বিশ্বাসই হিলারির ইমেইল তদন্ত প্রকাশ করার অন্যতম একটি কারণ ছিল।
কোমির এ মন্তব্যের জবাব দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি এক টুইট বার্তায় জানান, অবিশ্বাস্য! কোমি জানতো হিলারি জয়লাভ করতে যাচ্ছে এবং এটাই ছিল তার সিদ্ধান্ত নেয়ার কারণ। সে একটা চাকরি চেয়েছিল। কোমি একজন ঘৃণিত ব্যক্তি বলে তিনি ওই টুইট বার্তায় মন্তব্য করেন।