সিরিয়া যুদ্ধভয়াবহ যুদ্ধের কারণেই বাড়িঘর ছেড়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছে সিরিয়ার বহু মানুষ। কিন্তু যুদ্ধ শেষ হলেও কি তারা ফিরতে পারবেন? দেশটিতে ২০১১ সালে গৃহযুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে প্রায় পঞ্চাশ লাখ মানুষ। মূলত তাদের বেশিরভাগই আশ্রয় নিয়েছে প্রতিবেশী দেশগুলোতে। সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শরণার্থী এখন তুরস্কে, যার সংখ্যা প্রায় ৩৫ লাখ। আর লেবাননে আছে আরও প্রায় দশ লাখ। আর পাঁচ লাখেরও মতো শরণার্থীর জায়গা হয়েছে জার্মানিতে। এছাড়া ইউরোপের আরও কয়েকটি দেশে আছে অল্প কিছু শরণার্থী। কিন্তু কি পরিবর্তন তারা আসা করছে? এ নিয়ে দ্যা কার্নেগী মিডল ইস্ট সেন্টার লেবানন ও জর্ডানে থাকা ৩২০ জন শরণার্থীকে নিয়ে সিরিজ সভা করেছে। এ থেকেই বেরিয়ে এসেছে তাদের চারটি প্রত্যাশার কথা।

•সন্তানদের জন্য নিরাপত্তা

chardike-ad

শরণার্থীদের অনেকেই বলছে তারা স্থায়ী ভাবে বিদেশে থেকে যেতে চাননা। সংস্কৃতি পরিবর্তন ও বৈষম্যের ভয়েই এমনটি বলছে তারা। কিন্তু সিরিয়ায় ফিরে গেলে কেমন বিপদে পড়তে হবে সেটি নিয়ে উদ্বিগ্ন তারা। সিরিয়ার হোম শহর থেকে আসা আইশা যেমন বলছেন, কেউ কি পায়ে হেঁটে মৃত্যুর দিকে যেতে পারে?

•সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক অন্তর্ভুক্তির অবসান

বৈরুতের একটি ক্যাম্পে থাকেন তরুণ শরণার্থী হাসান। তার মতে, যারা সিরিয়া ছেড়ে এসেছেন, তাদের বিশ্বাসঘাতক বলে বিবেচনা করা হয় এখন। অন্য অনেকের মতো এই তরুণেরও উদ্বেগ যে দেশে ফিরলে তাকে বাধ্যতামূলক ভাবে সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে। সিরিয়ায় আঠারো বছর বয়স হলেই মিলিটারি সার্ভিসে যোগ দেয়া সব পুরুষের জন্যই বাধ্যতামূলক।

•ফেরার একটি ঘর চাই

দেশটির অনেকেরই এখন আর মাথা গোঁজার জায়গা নেই। শহরগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। বাড়িঘরের অস্তিত্বও নেই অনেক জায়গায়। বিভিন্ন বাহিনীর যখন যাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে, তারাই অনেক বাড়িঘর নিজেরা ব্যবহার করে। দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর অনেকের বাড়িঘরের কোন প্রমাণাদিও সঙ্গে নেই।

•নিরাপদে থাকা ও নিরাপত্তা

বিভিন্ন বাহিনীর হাতে আটক হওয়া, পরিবারের সদস্য বা বন্ধুদের মৃত্যুর ঘটনা এবং ক্রমাবনতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতির অভিজ্ঞতা নিয়ে দেশের বাইরে গিয়েছে অনেক শরণার্থী। তরুণ শরণার্থী তারেক তাই মনে করেন সিরিয়া ফেরার জন্য নিরাপদ নয়। কিন্তু এসব শরণার্থীরা সবাই চায় সিরিয়ার সমস্যার সমাধান হোক। তারা নাগরিক হিসেবে তাদের মর্যাদাও ফেরত চায়।