এর আগে তিনি লেবাননের ইসরায়েলবিরোধী শিয়া সংগঠন হিজবুল্লাহকে দমনে ইসরায়েলকে বিলিয়ন ডলার সাহায্য দিতে প্রস্তুত আছেন বলে জানিয়েছেন; ইসরায়েলবিরোধী ইরানকে মোকাবেলায় পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির ঘোষণা দিয়েছেন; সৌদি আকাশ ব্যবহার করে ভারত-ইসরায়েল বিমান চলাচল অনুমোদন করেছেন। কিন্তু এভাবে আর যিওনবাদী ইসরায়েলের সঙ্গে পরোক্ষ সম্পর্ক রক্ষার ধার ধারছেন না রাজতান্ত্রিক সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। এবার খোলামেলা বলেই ফেললেন, নিজেদের ভূমিতে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাসের অধিকার ইসরায়েলের রয়েছে।
মার্কিন ম্যাগাজিন দি আটলান্টিককে দেওয়া বিন সালমানের সাক্ষাৎকারটি গতকাল সোমবার প্রকাশিত হয়। রয়টার্সের আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, রিয়াদ ও তেল আবিবের মধ্যে বন্ধুত্ব যে বাড়ছে, এটা তারই একটি নমুনা।
দি আটলান্টিকের এডিটর-ইন-চিফ জেফ্রি গোল্ডবার্গ সৌদি যুবরাজকে জিজ্ঞেস করেছিলেন নিজেদের পিতৃপুরুষের ভূমিতে একটি জাতিরাষ্ট্র হিসেবে বসবাসের সুযোগ ইসরায়েলিদের আছে বলে তিনি মনে করেন কি-না।
জবাবে তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, নিজেদের ভূমির ওপর ফিলিস্তিনি এবং ইসরায়েলিদের পূর্ণ অধিকার আছে। আমাদের এখন একটি শান্তিচুক্তি দরকার, যাতে সব পক্ষই স্থিতিশীল ও স্বাভাবিক একটি সম্পর্ক বজায় রাখতে পারে।
গত মাসের শেষ দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র সফরে থাকা সৌদি যুবরাজ আটলান্টিককে বলেন, ফিলিস্তিনের জনগণের অধিকার এবং জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদ শুধু ধর্মীয় কারণেই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা শুধু এটুকুই বলতে চাই; অন্য কারও বিষয়ে আমাদের কোনও অভিযোগ নেই।
রয়টার্স লিখেছে, যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি যুবরাজের এই সফরের উদ্দেশ্য মার্কিন বিনিয়োগ আকর্ষণ করা এবং আঞ্চলিক প্রতিপক্ষ ইরানের প্রভাব বলয় ভেঙে সৌদির পক্ষে সমর্থন বাড়ানো।
মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব ও শক্তি মোকাবেলায় সৌদি আরব ইসরায়েলের সঙ্গে এক ধরনের গোপন সখ্যতা গড়ে তুলেছে বলে গুঞ্জন চলছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। গতবছর নভেম্বরে ইসরায়েলের জ্বালানিমন্ত্রী জুভাল স্টেইনিতজ রিয়াদ-তেল আবিব গোপন যোগাযোগের কথা স্বীকার করলে সেই ধারণা ভিত্তি পায়।
ইসরায়েলের চিফ অফ স্টাফ জেনারেল গাদি আইজেনকট সে সময় বলেছিলেন, ইরানকে মোকাবেলায় তার দেশ সৌদি আরবের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়েও প্রস্তুত। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সৌদি যুবরাজ আটলান্টিককে বলেন, ইসরায়েলের সঙ্গে অনেক বিষয়েই আমাদের আগ্রহের মিল আছে। আর শান্তি যদি থাকে, উপসাগরীয় সহযোগিতা কাউন্সিলের অন্য সদস্য দেশগুলোও ইসরায়েলের সঙ্গে অনেক বিষয়েই আগ্রহী হবে।
সৌদি আরব গত মাসে প্রথমবারের মত তাদের আকাশপথ ইসরায়েলগামী কমার্শিয়াল ফ্লাইটের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়। দুই দেশের সম্পর্কের পরিবর্তনের ধারায় ওই ঘটনাকে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করেছেন ইসরায়েলের কর্মকর্তারা। সুত্র-অর্থসূচক