চাঁপাইনবাবগঞ্জ কারাগারের কর্তব্যরত এক কারারক্ষীর উত্তেজিত মেজাজে বের হয়ে আসলো তার দুর্নীতির কথা। গত বৃহস্পতিবার (২৯ মার্চ) চাঁপাইনবাবগঞ্জের কিছু স্থানীয় সংবাদকর্মী জেলার মো. শরিফুল ইসলামের সাথে সাক্ষাৎ করতে যায়। তবে বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩ ঘন্টা অপেক্ষা করার পরও দেখা করেননি তিনি।
অফিস চলাকালীন সময়ে তিনি অফিসে হাজির হননি। যার ফলে আদালতের জামিনে মুক্তি পাওয়ার পরেও অনেক কারাভোগকারী সেই দিন বের হতে পারেননি। এ নিয়ে কারা ফটকের সামনে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
সংবাদকর্মীদের অপেক্ষার এক পর্যায়ে জেলার শরিফুল ইসলামের নির্দেশে এক কারারক্ষী ‘মনোয়ার হোসেন’ ক্যামেরা নিয়ে এসে গণমাধ্যমকর্মীদের ছবি উঠায়। তবে কারারক্ষী মনোয়ার হোসেনকে ছবি তোলার বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি উত্তেজিত হয়ে উঠেন।
‘সংবাদকর্মীদের অনুমিত ছাড়াই তাদের ছবি তোলাটা কতটুকু যৌক্তিক’ সে বিষয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে মনোয়ার রাগান্বিত হয়ে চিৎকার দিয়ে বলে, ‘১৬ লাখ টাকা দিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কারাগারে এসেছি কারও প্রশ্নের উত্তর বা কমান্ড মানতে নয়।’ এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি নিয়ে কারাফটকে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
মনোয়ারের এ ধরনের আচরণের জন্য আবারও জেলার শরিফুল ইসলামকে মুঠোফোনে কল দেয়া হয়।
পরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেল সুপার মো. শফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কারারক্ষী মনোয়ারের আচরণের কথা শুনে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। তিনি বিডি২৪লাইভকে বলেন, ‘যে ব্যক্তি ১৬ লাখ টাকা দিয়ে চাকরি নেয় সে তো ইনভ্যালিড। তার কোন যোগ্যতাই নেই, সে একটা অযোগ্য ব্যক্তি। বিষয়টি নিয়ে আমরা বসবো এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।’
প্রসঙ্গত, গত ১৯ মার্চ একই কারাগারে কর্মরত একজন নারী কারারক্ষীর স্বামী তরিকুল ইসলাম বকুলকে বেধড়ক মারপিট করে জখমের অভিযোগ ওঠে জেলার শরিফুল ইসলাম ও অন্য কারারক্ষীদের বিরুদ্ধে। কারাফটকের সামনে বে-আইনিভাবে হাতে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে তাকে মারার অভিযোগ ওঠে। ঘটনার পর তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ ঘটনার পর ২৫ মার্চ জেলার শরিফুল ইসলাম ও প্রধান তিন কারারক্ষীসহ মোট সাত জনকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন তরিকুল ইসলাম বকুল। আর এ মামলার বিষয়ে জানতে গেলে সংবাদকর্মীদেরকে উল্টো ভয়ভীতি দেখিয়ে তাড়িয়ে দেয়ার অপচেষ্টা ও হুমকি দেন কারারক্ষী মনোয়ার হোসেন।
মনোয়ার এর আগে রাজশাহী কারাগারে কর্মরত ছিলেন। সেখানেও তার নামে কয়েদি পেটানো ছাড়া নানান অভিযোগ রয়েছে। তিনি ২০১৬ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কারাগারে যোগ দেন।