উত্তর কোরিয়ায় পণ্য পাচারে সহযোগিতা করায় ২৭টি জাহাজ ও ২১ জাহাজ কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে জাতিসংঘ। কয়লা ও তেলের মতো পণ্যের চোরাচালান ঠেকাতে গতমাসে এই নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব করে যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘের এই নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পর এখন পর্যন্ত কোন প্রতিক্রিয়া জানায়নি পিয়ংইয়ং। এদিকে, আগামী দু’মাসের মধ্যে আন্ত:কোরীয় সম্মেলন ছাড়াও ওয়াশিংটন-পিয়ংইয়ং সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া।
উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের চীন সফরকে ঘিরে কোরীয় উপদ্বীপ ও ওয়াশিংটন-পিয়ংইয়ং সম্পর্কে আশার আলো দেখছে বিশ্ব সম্প্রদায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে কিমের সরাসরি বৈঠকের সম্ভাবনাও বেড়েছে বহুগুণ।
উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের সাম্প্রতিক চীন সফরের বিস্তারিত জানাতে সিউল সফর করছে চীনের বিশেষ প্রতিনিধিদল। শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের বাসভবন ব্লু হাউজে প্রেসিডেন্ট মুন জে ইনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তারা। এ সময় কোরীয় সংকট সমাধানে রাজনৈতিক সমঝোতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন চীনের প্রতিনিধিদল ও প্রেসিডেন্ট মুন জে ইন। পরে এক সংবাদ সম্মেলনে, আগামী দু মাসের মধ্যে আন্তঃকোরীয় এবং ওয়াশিংটন-পিয়ং ইয়ং সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা জানানো হয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাং কিয়ুং হোয়া বলেন, আগামী দু’মাসে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে সম্মেলনই শুধু নয়, যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যেও সরাসরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। আমরা চাই, কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি প্রতিষ্ঠায় চীন আমাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা করুক।
জ্যেষ্ঠ চীনা কূটনীতিক ইয়াং জিয়েছি বলেন, দুই সম্মেলনের প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে, এবং এ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে চলমান সংকট নিরসন হবে বলে আমরা আশা করি।
এ সময় কোরীয় সংকট সমাধানে চীনের ভূমিকার প্রশংসা করেন প্রেসিডেন্ট মুন জে ইন। একইসঙ্গে, সামনের দিনগুলোতে পাশে থাকার আহ্বান জানান তিনি।
এর মধ্যেই শুক্রবার উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করলো জাতিসংঘ। উত্তর কোরিয়ায় পণ্য পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ২৭টি জাহাজ ও ২১টি জাহাজ কোম্পানিকে নিষিদ্ধ তালিকাভুক্ত করেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। নিষিদ্ধ করা ২৭টি জাহাজের ১৬টিই উত্তর কোরিয়ার বলে জানা গেছে। এছাড়া নিষিদ্ধের তালিকায় হং কং এর ৫টি, চীনের ২টি, তাইওয়ানের ২ টি এবং পানামা ও সিঙ্গাপুরের ১টি করে জাহাজ আছে বলে জানানো হয়।
নিষিদ্ধ তালিকায় থাকা তেলবাহী ট্যাংকার ও পণ্যবাহী জাহাজগুলো পৃথিবীর কোন দেশের বন্দরে ভিড়তে পারবে না বলে জানান নিরাপত্তা পরিষদের এক কর্মকর্তা।
উত্তর কোরিয়ার ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞার কারণে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ আলোচনার দ্বার প্রশস্ত হচ্ছে বলে মনে করে যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন প্রতিনিধি নিকি হ্যালি বলেছেন, জাতিসংঘের এ সিদ্ধান্ত প্রমাণ করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ। তবে ভিন্ন মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, নতুন এ নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্র-উত্তর কোরিয়া সম্পর্কে বিরূপ প্রভাবও পড়তে পারে।