‘রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায়’ নিউইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি হয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন-এফবিআই। এই অর্থ চুরি তদন্তের সঙ্গে জড়িত ফিলিপিন্সে থাকা এফবিআই’র একজন সদস্য বুধবার এ তথ্য জানান।
রিজার্ভ চুরির পেছনে নর্থ কোরিয়াকে আগে থেকেই সন্দেহ করছে এফবিআই। এছাড়া রিজার্ভ চুরির ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক কোড নম্বরের খোঁজ পাওয়ার কথা জানিয়েছে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা-এনএসএ।
ফিলিপিন্সের মার্কিন দূতাবাসের আইন কর্মকর্তা ল্যামোন্ট সিলার বিস্তারিত না বললেও জানিয়েছেন, ‘আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির সব জানি, এ যাবতকালে ব্যাংকিং খাতে ‘রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায়’ হওয়া সবচেয়ে বড় উদাহরণ এটি।’
সাইবার নিরাপত্তা ফোরামের বক্তৃতায় সিলার বলেন, ম্যানিলা একটি জোড়ালো সঙ্কেত দিয়েছে যার সূত্র ধরে মার্কিন কর্তৃপক্ষ কারা এর পেছনে রয়েছে সেটার কাছাকাছি রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই সাইবার হামলার পেছনে নিশ্চিত হতে ফিলিপিন্স সরকারের সঙ্গে এক সঙ্গে কাজ করেছে এফবিআই। এর সঙ্গে জড়িত অপরাধীরা বিনা শাস্তিতে পাড় পাবে না।
সিলার বলেন, আমরা ন্যায়বিচারের জন্য এইসব অপরাধী ব্যক্তিদের আনতে চাই, যাতে আমরা অন্যদের দেখাতে পারি যে, আপনি হয়তো এই ধরনের আক্রমণ, এমনকি রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায়ও করতে পারেন, কিন্তু আপনি শেষ পর্যন্ত পাড় পাবেন না।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে বাংলাদেশের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার রিজার্ভ চুরির ঘটনা ঘটে। এর বেশিরভাগটাই শেষ পর্যন্ত গিয়েছিল ফিলিপিন্সের বিভিন্ন ক্যাসিনোতে। নানা পদক্ষেপের পর অল্প কিছু উদ্ধার হলেও বেশির ভাগ অর্থই উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
এ ঘটনায় নর্থ কোরিয়া সরকারের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল আইনজীবীরা মামলাও করতে যাচ্ছেন। ফেডারেল আইনজীবীদের বিশ্বাস, চীনা দালালরা বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ লুট করতে পিয়ংইয়াংকে সাহায্য করেছে। এই মামলাটি দায়ের হলে শুধু নির্দিষ্ট কয়েকজন নর্থ কোরীয় কর্মকর্তা নন, পুরো দেশটাই জড়িয়ে যাবে।
এই মামলার পাশাপাশি ফেডারেল রিজার্ভ পর্যায়ে দালালি ব্যবস্থায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথাও ভাবছে মার্কিন কোষাগার।
মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসএ’র উপ-পরিচালক রিচার্ড লেজেট জানান, ধারণা করা হচ্ছে রিজার্ভ চুরির সঙ্গে নর্থ কোরিয়ার সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে। এরপরই এফবিআইয়ের মামলা করার পরিকল্পনাটি প্রকাশ পায়। বেসরকারি কিছু অনুসন্ধানী সংস্থাও বহুদিন ধরে দেশটির জড়িত থাকার বিষয়ে সন্দেহ করে আসছে।
সূত্র- চ্যানেল আই