বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে শনিবার (১৭ মার্চ) সকালে কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ নেতাদের হাতে লাঞ্ছিত হতে হয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরি। এ সময় কলেজ শিক্ষকরা ছাত্রলীগকে নিবৃত করার চেষ্টা করলে তাদেরকেও লাঞ্ছিত করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকালে জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী সরকারি কলেজে আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যান। এসময় বক্তব্যে তাঁর (নাজনীন) নাম ঘোষনা করলে কলেজ ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক শাখায়াত হোসেন হট্টগোল শুরু করে নাজনীন সরওয়ারকে মারতে তেড়ে আসেন। এসময় উশৃঙ্খল ছাত্রলীগ নেতারা তাকে শারীরিকভাবে হেনেস্তা করে। পরে কাবেরী বাধ্য হয়ে অনুষ্ঠান ত্যাগ করেন।
দুপুরে কক্সবাজার প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন আওয়ামী লীগ নেত্রী নাজনীন সরওয়ার কাবেরি। সংবাদ সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী অভিযোগ করেন বলেন, ‘১৭ মার্চ শনিবার সকালে কক্সবাজার সরকারি কলেজে বঙ্গবন্ধুর জন্ম বার্ষিকী পালন করতে যাই। এসময় বক্তব্য দেয়ার জন্য আমার (কাবেরি) নাম ঘোষণা করলে কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাখায়াত হোসেন ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে অশালীন গালিগালাজ শুরু করে। ছাত্রলীগ নেতা শাখাওয়াত চেয়ার নিয়ে আমাকে মারতে তেড়ে আসেন।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী রাজনৈতিক পরিবারে জন্মেছি। স্কুল জীবন থেকে ছাত্রলীগের সাথে ছিলাম। দীর্ঘ এক যুগ ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছি। আজ এই ছাত্রলীগ আমার বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ স্লোগান দিয়ে আমার চরিত্র হননের চেষ্টা করলো। এমনকি তারা আমাকে শারীরিকভাবেও হেনস্তা করে ছাড়লো।’ তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘এটাই কি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে রাজনীতির পাওনা?’
কাবেরি বলেন, ‘পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে আমি যখন বাধ্য হয়ে মঞ্চ থেকে নেমে আসছিলাম, তখন ছাত্রলীগের ঐ গ্রুপটি আমাকে কেটে টুকরা টুকরা করে ফেলবে বলে হুমকি দেয়।’
‘ছাত্রলীগ নামে এরা সন্ত্রাসী’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এ নেত্রী বলেন, ‘এদের নেতৃত্বে কলেজের জমি দখল হয়। আমি তার প্রতিবাদ করায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে গালিগালাজ ও মারতে তেড়ে আসে। তাদের হাতে শিক্ষকরাও জিম্মি।
অভিযোগের ব্যপারে জানতে চাইলে কক্সবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, কাবেরি আপাকে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে কলেজ প্রশাসন দাওয়াত না দেয়া সত্বেও কলেজে আসেন। হঠাৎ অনুষ্ঠান স্থালে এসে মঞ্চে উঠে মাইক নিয়ে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন যে কলেজ ছাত্রলীগের কর্মীরা জায়গা দখল করছে। এতে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে কলেজ প্রশাসন কাবেরি আপাকে চলে যেতে বাধ্য করেন।
কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি জাকের হোসেন বলেন, কাবেরি আপা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দখলবাজ ও সন্ত্রাসী বলায় অনুষ্ঠান মঞ্চে সাধারণ-ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে আমি তাকে নামিয়ে দেয়।
সৌজন্যে- পূর্বপশ্চিম