হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছিল না মশার উৎপাত। তাই এবার মশা তাড়াতে ‘কামান’ হিসেবে ধূপ ব্যবহার করেছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। শনিবার সন্ধ্যায় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ দুটি টার্মিনাল, রানওয়েসহ গুরুত্বপূর্ণস্থানগুলোতে মশা তাড়াতে অর্ধশত ধূপের পাতিল বসিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ধূপ দেয়ার পর ২০ মিনিটের মধ্যে গোটা কনকর্স ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, মশা নিধনে এবার বেশকিছু ভেষজ পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে। প্রথমত, ধূপ দিয়ে শুরু করা হয়েছে। এতে কাজ না হলে আরও ভেষজ পদ্ধতি প্রয়োগ করা হবে। ধূপ ছাড়াও মশা তাড়ানোর হিট লিস্টে রয়েছে নিমপাতা, নিশিন্দা, হলুদ, পাতিলেবু, কর্পূর।
সন্ধ্যায় বিমানবন্দরগামী যাত্রীরা অভিযোগ করেন, ‘ধূপ থেরাপি’ব্যবহার করে মশা তাড়াতে গিয়ে বিমানবন্দরকে অস্বাস্থ্যকর বানানো হয়েছে। এছাড়া এর তীব্র ঝাঁঝালো গন্ধ মানুষ বিতাড়িত হচ্ছে।
এ বিষয়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ডেপুটি ডাইরেক্টর মোশাররফ হোসেন বলেন, বিমানবন্দরের মশা তাড়াতে আমরা সনাতন পদ্ধতির উপর নির্ভরশীল একথা ঠিক না। আমরা আধুনিক পদ্ধতির ইউএলবি স্প্রে, মসকিটে টেপ, এয়ার কার্টার ব্যবহার করেছি। টার্মিনালের গেটগুলোতে কেবল সন্ধ্যার সময় কিছু সময়ের জন্য ধূপ জ্বালানো হয়।
বিমানবন্দরের ডিউটি অফিসার আব্দুল লতিফ বলেন, আমরা বিমানবন্দরকে মশা মুক্ত করতে সচেষ্ট। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এ সমস্যাকে গুরুত্ব দিয়ে মোকাবেলা করছে। যাত্রীদের মশার অত্যাচার থেকে বাঁচাতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছি।
উল্লেখ্য, ২৩ ফেব্রুয়ারি শাহজালালে মশার আক্রমণের কারণে মালয়েশিয়ান এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইট ছাড়তে বিলম্ব হয়। সেদিন শাহজালালের রানওয়ে থেকে উড্ডয়নের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে এ ঘটনা ঘটে। বিমানের ভেতরে অসংখ্য মশা ঢুকে পড়ায় যাত্রীরা চেঁচামেচি ও হট্টগোল শুরু করেন। এক ঘণ্টার মধ্যে বিমানের ভেতর ও রানওয়েতে মশা তাড়ানোর ব্যবস্থা নেয় কর্তৃপক্ষ। পরে রাত আড়াইটায় ফ্লাইটটি আকাশে ওড়ে।
এ ঘটনার পর মশা তাড়াতে কয়েক দফায় বৈঠক করে সিভিল এভিয়েশন ও শাহজালাল কর্তৃপক্ষ। পরামর্শ চাওয়া হয় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের কাছে। এরপর রানওয়ে ও টার্মিনালগুলোর জলাশয় ও ঝোপঝাড় কাটার উদ্যোগ নেয় কর্তৃপক্ষ।