Search
Close this search box.
Search
Close this search box.

ইপিএসে দক্ষিণ কোরিয়ায় আসার সুযোগ যেন এক সোনার হরিণ। যার পিছনে ছুটছে লাখ লাখ তরুণ। স্বল্প খরচে কোরিয়া এসে লাখ লাখ টাকা আয়ের সুযোগই এর মূল কারণ। ছুটতে হয়না দালালদের পিছনে। লটারীতে হয়ে গেলে ইপিএস টপিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে সুযোগ উন্মুক্ত হয় দক্ষিণ কোরিয়ায় আসার। কিন্তু লটারী আশায় কোরিয়ান ভাষা শিখে সময় এবং অন্য কিছু করে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ হারাচ্ছে অনেক তরুণ।

chardike-ad

গত ৪ মার্চ ২০১৮ সালের জন্য ইপিএস অনলাইন রেজিস্ট্রেশন অনুষ্ঠিত হয় এবং এতে ১,৪৪,৭৫৬ জন প্রার্থী রেজিস্ট্রেশন করে। দুই দিন পর অর্থাৎ ৬ মার্চ এইচআরডি কোরিয়া কর্তৃক লটারির মাধ্যমে চূড়ান্ত রেজিস্ট্রেশনের জন্য ৮৪০০ জনকে নির্বাচিত করে। অপেক্ষমাণের জন্য ৩,৬০০ জন প্রার্থীকে নির্বাচিত করা হয়। এর মধ্যে পরীক্ষা দিয়ে শেষ পর্যন্ত কতজন কোরিয়া যেতে পারবে তা নিশ্চিত নন কেউ। গত কয়েক বছরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী গড়ে ২ থেকে ৩ হাজারের মত কর্মী কোরিয়া আসার সুযোগ পাচ্ছে। ফলে লটারীতে টেকার পরও হাজার হাজার প্রার্থী শেষ পর্যন্ত কোরিয়া আসার সুযোগ পান না।

সরাসরি লটারী না করে অন্য কোন উপায় বের করার পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়া ভিত্তিক ইপিএস কর্মীদের সংগঠন ইপিএস বাংলা কমিউনিটি ইন কোরিয়ার সভাপতি শান্ত শেখ। তিনি বাংলা টেলিগ্রাফকে বলেন ‘সরাসরি লটারী হওয়ায় হাজার হাজার তরুণ যারা কোরিয়ান ভাষা শিখে বসে আছে তারা বঞ্চিত হচ্ছে। কোরিয়া ভাষা শিখে যারা একটি লেভেল পাশ করবে শুধু তারদেরকে ইপিএস পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া যেতে পারে। যেমন ধরুন যদি স্ট্যান্ডার্ড টপিক লেভেল ২ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়, দেখা যাবে সারা বছরে ১০ হাজার শিক্ষার্থীই হয়ত টপিক ২ পাশ করতে পারবে না। এই লাখ লাখ তরুণ ভোগান্তির শিকার না হয় এমন একটি উপায় এইচআরডি কোরিয়ার বের করা উচিত। এখন লটারীর ফলে যারা কয়েক বছর ধরে কোরিয়ান ভাষা শিখছে তারা বাদ পড়ে যাচ্ছে’।

কোরিয়ান কালচালার ক্লাব বাংলাদেশের সভাপতি দিদারুল ইসলাম ইপিএসের প্রার্থীদের হতাশার কথা জানিয়েছেন বাংলা টেলিগ্রাফকে। তিনি বলেন ‘আমার কাছে মনে হয় আমার দেশের মোট প্রার্থীর আনুমানিক ২ থেকে ৩ শতাংশ কোরিয়া যেতে পারছে। বাকি ৯৭থেকে ৯৮ শতাংশ প্রার্থীর সবাই ১০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ইপিএস এর পিছনে খরচ করছে। এর জন্য সময় দিচ্ছে। এটা নিয়া স্বপ্ন দেখছে। অনেকেই আছে যারা চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়েও যেতে পারে না। আবার অনেকে আছে যারা ৪ থেকে ৫ বছর ধরে এটার পিছনে লেগে আছে কিন্তু লটারীতে নাম আসেনা, এমনকি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও কোরিয়ায় যেতে পারেনি এমন তরুণের সংখ্যাও অনেক। এতে হতাশ এই লাখ লাখ তরুণ’।

কোরিয়ান সরকারের শ্রম মন্ত্রণালয়ের এইচআরডি কোরিয়া ইপিএস (এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেম) এর মাধ্যমে ১৬ টি দেশ থেকে কর্মী নিচ্ছে। বাংলাদেশ ছাড়া অন্যান্য দেশগুলো হলো নেপাল,  ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিন, মংগোলিয়া, কম্বোডিয়া, কিরজিগিস্তান,  মায়ানমার,  পাকিস্তান,  শ্রীলংকা,  থাইল্যান্ড,  উজবেকিস্তান, ভিয়েতনাম,  চীন এবং ইস্ট তিমুর। ২০০৭ সালে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়ার জন্য কোরিয়ান সরকার এবং বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে একটি চুক্তি (MOU-Memorendum of Understanding) স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তি অনুযায়ী বোয়েসেলের মাধ্যমে ২০০৮ সাল থেকে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ শুরু হয়। এই প্রক্রিয়া বোয়েসেল ছাড়া অন্যকোন এজেন্ট বা কোম্পানি বা সংস্থা কোনোভাবেই কোরিয়ায় কর্মী প্রেরণ করতে পারবে না।