ভারতের ক্রিকেটার মোহাম্মদ শামির সঙ্গে আইপিএলে পরিচয় হয়েছিল কলকাতার মডেল কন্যা হাসিন জাহানের। প্রথমে পরিচয় থেকে প্রণয়, এরপর ২০১৪ সালে দুজন বসেছিলেন বিয়ের পিঁড়িতে। ভালোই চলছিল দাম্পত্য জীবন। মাঝে দু-একটা সাক্ষাৎকারে হাসিন যেমন স্বামীর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন, তেমনি শামিও জীবনসঙ্গী ও সন্তানকে ‘নিজের জীবন’ বলে মর্যাদা দিয়েছেন। কিন্তু হঠাৎ এক ঝড়ে সেই সুখের সংসার এখন এলোমেলো! হাসিনের দাবি, ঝড়টা এনেছেন স্বয়ং তাঁর স্বামী—মোহাম্মদ শামি!
শামির বিরুদ্ধে বিবাহবহির্ভূত একাধিক সম্পর্কে জড়ানোর অভিযোগ তুলেছেন তাঁরই স্ত্রী হাসিন। ভারতীয় এ পেসার নাকি হাসিনকে এ জন্য মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতনও করেছেন! সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাসিন নিজেই ফাঁস করেছেন শামির বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের একাধিক কেচ্ছা-কাহিনি।
বেশ কিছু মেয়ের সঙ্গে শামির চ্যাটিংয়ের স্ক্রিনশট ‘শামি’স এনজয়মেন্ট’ ক্যাপশনে পোস্ট করেছেন হাসিন। কয়েকটি মেয়ের ছবিও পোস্ট করে হাসিন তার ক্যাপশনে লিখেছেন ‘শামি’স গার্লফ্রেন্ডস’। এখানেই শেষ নয়, হাসিন তাঁর স্বামীর বিএমডব্লিউ গাড়িতে লুকোনো ফোন আর পুরুষদের জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়িও খুঁজে পেয়েছেন!
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এবিপি নিউজকে হাসিন শামির পরকীয়া-কাহিনি বর্ণনা করেছেন, ‘আমি যা যা পোস্ট করেছি, সেসব আসলে সামান্য নমুনামাত্র। শামির আচরণ এর চেয়ে আরও জঘন্য। একাধিক মেয়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক রয়েছে।’ হাসিনের দাবি, শামির বিএমডব্লিউতে তিনি যে ফোন খুঁজে পেয়েছেন, সেটা ২০১৪ সালে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের কাছ থেকে উপহার পাওয়া। ফোনটা ‘লক’ করা ছিল। হাসিন বেশ চেষ্টার পর সেই ‘লক’ খুলে শামির ‘চ্যাটিং’য়ের কেচ্ছা-কাহিনি বের করেন।
শামির এই বিবাগবহির্ভূত সম্পর্কের প্রতিবাদে আইনি সাহায্য নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হাসিন। তাঁর বক্তব্য, প্রায় দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে শামির পরিবার তাঁর ওপর নির্যাতন করছে। তাঁকে নাকি হত্যার চেষ্টাও করা হয়েছে! হাসিনের দাবি, ‘তাদের পরিবারের সবাই আমাকে নির্যাতন করত। তার মা ও ভাই আমাকে প্রতিনিয়ত অপমান করেছে। এমনকি তারা আমাকে হত্যা পর্যন্ত করতে চেয়েছে।’
হাসিন জানান, গত জানুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকে ফেরার পর তাঁকে নাকি শারীরিক অত্যাচার করেছেন শামি, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকে ফেরার পর সে (শামি) আমাকে মেরেছে। সে অনেক দিন ধরেই এসব করছে, এখন আমি আর সহ্য করতে পারছি না। সে পাকিস্তানি একটা মেয়েকেও বিয়ে করছে, দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকে ফেরার পর তার সঙ্গে দেখাও করেছে। পরিবার ও সন্তানের কথা ভেবে চুপ থাকলেও ফোনে ওসব নোংরা আলাপ দেখার পর আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে। আর সহ্য করতে পারছি না। এসব প্রমাণের ভিত্তিতে আইনি সাহায্য নিতে চাই।’
দেওধর ট্রফিতে খেলতে শামি এখন ধর্মশালায় অবস্থান করছেন। হাসিন সেখানে তাঁর সঙ্গে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শামি তাঁকে সঙ্গে নেননি। এ ব্যাপারে ইন্ডিয়া টিভিকে হাসিনের ভাষ্য, ‘আমি ধর্মশালায় তার সঙ্গে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সে রাজি হয়নি। উল্টো সেখান থেকে ফোনে আমাকে অপমান করেছে। ভারতীয় দল যেখানে সফর করুক না কেন, কুলদীপ নামের এক লোক তাকে মেয়ে সরবরাহ করে। বিসিসিআই এ ব্যাপারে কিছুই করছে না।’
যে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে হাসিন এ অভিযোগ করেছেন, তা বর্তমানে বন্ধ আছে। ২৯ বছর বয়সী এ পেসার অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করে টুইটারে লিখেছেন, ‘আমাদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে, তা একেবারেই মিথ্যা, বানোয়াট। এটা আমাদের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র।’